মার্কিন মুলুকে বসে এ বার খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্টকেই ‘সাবধান’ করে দিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। মঙ্গলবার মার্কিন কংগ্রেসের অনুদান-পুষ্ট ‘ইউএস ইনস্টিটিউট অব পিস’-এ ইমরান স্পষ্ট বললেন, ‘‘ইরানে একটা ভুল পদক্ষেপ করলেই তার ফল হবে ভয়াবহ, মারাত্মক। এতে সন্ত্রাসবাদ যে ভাবে মাথাচাড়া দেবে, তাতে লোক ‘আল-কায়দা’-ও ভুলে যাবে।’’ ২০০৩-এ ইরাকে হামলার প্রসঙ্গ তুলেও এ দিন ডোনাল্ড ট্রাম্পকে কার্যত হুঁশিয়ারি দিলেন ইমরান— ‘একই ভুল আর নয়।’ সামরিক সমাধান নয়, ইরান-আমেরিকার সঙ্কট মেটাতে আলোচনাই একমাত্র পথ বলে মন্তব্য করলেন পাক প্রধানমন্ত্রী। জানালেন, প্রয়োজনে এ জন্য মধ্যস্থতা করতেও রাজি তিনি।
গত বছরের মাঝামাঝি ট্রাম্প একা ইরান পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে এসে তেহরানের উপর একগুচ্ছ নিষেধাজ্ঞা চাপানোর পর থেকেই দু’দেশের সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে। হালে জুড়েছে ড্রোন-সঙ্কট। কে কার ড্রোন নামাল, তা নিয়ে তরজা চলছেই। দু’পক্ষই মুখে একাধিক বার জানিয়েছে যে তারা কেউই যুদ্ধ চায় না। কিন্তু একে অপরকে চাপে রাখার রাস্তা থেকে সরছে না কেউই। এরই মধ্যে আবার মে-র শেষে ট্রাম্প টুইট করেছিলেন, ‘‘ইরান যদি যুদ্ধ চায় তা হলে সেটাই হবে ওদের শেষ দিন।’’ দু’দিন আগে ইমরানকে পাশে বসিয়ে আফগানিস্তানকেও একই রকম হুঁশিয়ারি দিয়ে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘‘এক সপ্তাহও সময় লাগত না। চাইলে আমরা এরই মধ্যে মানচিত্র থেকে আফগানিস্তানকে পুরোপুরি মুছে ফেলতে পারতাম।’’
এই দুই হুমকির কথা উল্লেখ না-করলেও ট্রাম্পের মনোভাব আন্দাজ করেই ইমরান কাল বলেন, ‘‘বোমারু বিমান দিয়ে হামলা চালালে, যুদ্ধটা হয়তো ক্ষণস্থায়ী হবে। কিন্তু তার দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব নিয়ে অনেকেই ভাবছেন না। এটা মারাত্মক।’’
কিন্তু এ দিকে ইরানও যে গোঁ ধরে বসে রয়েছে! তা হলে উপায়? ইমরান জানালেন, তাঁরা ইতিমধ্যেই ইরানের কাছে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়ে রেখেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘পাকিস্তানের কিছু করার থাকলে, তা অবশ্যই করা হবে। কিছু দিন আগে পর্যন্তও ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছিল তেহরান। এখন পরিস্থিতি পাল্টেছে।’’
তাই পরিবর্ত পরিস্থিতিতে দু’পক্ষকেই সংযম দেখাতে হবে বলে মনে করেন তিনি। ইরান-আমেরিকার মধ্যে সম্ভাব্য যুদ্ধের ঝুঁকি নিয়ে এর আগেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন ইমরান। সেটা ছিল মে। দু’দিনের পাকিস্তান সফরে এসেছিলেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী মহম্মদ জাভেদ জ়ারিফ।