imran khan

Imran Khan: আস্থা ভোটের পরীক্ষায় নামছেন ইমরান, একদম চিন্তা করবেন না, জিতবই, আশ্বাস দেশবাসীকে

এর পরেও কুর্সি কি বাঁচবে? দেশবাসীকে ইমরানের আশ্বাস, ‘‘একদম চিন্তা করবেন না। এক জন ‘কাপ্তান’-এর সব সময়েই কোনও না কোনও পরিকল্পনা থাকে। আর এ বার আমার একাধিক পরিকল্পনা আছে। ঈশ্বর সহায় হলে কাল আমরা জিতবই।’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ইসলামাবাদ শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২২ ০৬:১৯
Share:

ফাইল চিত্র।

পাক ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে আস্থা ভোটের ২৪ ঘণ্টা আগে পাটিগণিত বলছে, সরকার বাঁচানোর মতো সংখ্যা নেই ইমরান খানের। তাঁর বিরুদ্ধে বিদেশি মদতে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে ফের অভিযোগ তুলে জনতাকে আজ ও কাল রাস্তায় নেমে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করার আহ্বান জানিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী।

Advertisement

কিন্তু বিরোধী পক্ষ যদি অনাস্থা প্রস্তাবটাই শেষ মুহূর্তে প্রত্যাহার করে নেয়? শীর্ষ স্তরের একটি সূত্রের দাবি, এই একটি মাত্র বিষয় ধরেই এখন বিরোধীদের সঙ্গে নেপথ্যে আলোচনা চালাচ্ছে ইমরানের সরকার। সেই অঙ্ক একেবারেই লেনদেনের— বিরোধীরা অনাস্থা প্রস্তাব প্রত্যাহার করবে। বিনিময়ে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ভেঙে দিয়ে ভোটে যাওয়ার কথা ঘোষণা করবেন ইমরান। তাতে সাপও মরবে, লাঠিও ভাঙবে না। সূত্রটির কথায়, ‘‘এই বোঝাপড়া যদি চূড়ান্ত হয়, সে ক্ষেত্রে ‘প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ ব্যক্তি’ হয়তো গ্যারান্টারের ভূমিকা পালন করবেন।’’

গত কাল ইমরানও এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘প্রতিষ্ঠান’ তাঁকে তিনটি বিকল্প দিয়েছিল— ইস্তফা, আস্থা ভোট এবং নির্বাচন এগিয়ে আনা। ইমরানের দল পিটিআইয়ের দুই শরিক এমকিউএম-পি এবং বিএপি (এক জন সদস্য বাদে) ইতিমধ্যেই বিরোধী জোটে যোগদিয়েছে। শাসক দলের দু’ডজনের কাছাকাছি এমপি বিক্ষুব্ধ। ইমরানের মতে, আস্থা ভোটে উতরে গেলেও গেলেও দলবদলুদের নিয়ে সরকার চালানো আর সম্ভব নয়। কাজেই তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন, ভোট এগিয়ে আনাই শ্রেষ্ঠ বিকল্প।

Advertisement

প্রশ্ন হল, কে এই ‘প্রতিষ্ঠান’? ইমরান স্পষ্ট না করলেও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এ ক্ষেত্রে পাক সেনার দিকেই ইঙ্গিত করেছেন তিনি। সেনাপ্রধান কমর জাভেদ বাজওয়া চলতি সপ্তাহেই দেখা করেছিলেন ইমরানের সঙ্গে। গত কাল ইমরানকে তাই প্রশ্নও করা হয়েছিল, বিরোধীরা বা ‘অন্য কোনও পক্ষ’ তাঁকে নির্বাচন এগিয়ে আনার প্রস্তাব দিয়েছে কি না। তখনই তিনি ওই কথা বলেন। এ দিন একটি চ্যানেলে সরাসরি ফোন-ইন অনুষ্ঠানে ছিলেন ইমরান। সেখানে তিনি দাবি করেন, সেনার সঙ্গে তাঁর কোনও বিরোধ নেই। বর্তমান পরিস্থিতিতে সেনা যে নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে, তাকে তাঁরা সম্মান করেন। দেশবাসীকে তাঁর অনুরোধ, কেউ যেন সেনার সমালোচনা না করেন।

নেপথ্যে যা-ই চলুক, এ দিন টিভিতে ইমরান ফের অভিযোগ করেন, বিদেশি শক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিশ্বাসঘাতকেরা ‘নির্লজ্জ ষড়যন্ত্র’ চালাচ্ছে তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ না হলে প্রকৃত পরিবর্তন আসবে না। দেশের যুব সম্প্রদায়ের উদ্দেশে ইমরান বলেন, ‘‘কাল দেখবেন, কী ভাবে আমি ওদের (বিরোধীদের) মুখোমুখি হই। পাকিস্তান এখন এক নির্ণায়ক মুহূর্তে দাঁড়িয়ে। এই সময়ে চুপ করে থাকবেন না। অন্য কোনও দেশে এমন হলে মানুষ রাস্তায় নেমে আসত। আজ আর কাল শান্তিপূর্ণ ভাবে পথে নামুন— নিজের বিবেকের জন্য, দেশের জন্য, সন্তানদের জন্য।’’

বিরোধীদের দাবি, অন্তত ১৭৫টি ভোট তাদের পক্ষে পড়বেই, যা ম্যাজিক সংখ্যা (১৭২)-এর চেয়ে বেশি। একটি পাক চ্যানেলের দাবি, বিরোধী-বিক্ষুব্ধ মিলে সবাই ভোট দিলে সংখ্যাটা ১৯৯-এ পৌঁছে যেতে পারে। ইমরানের যদিও বক্তব্য, ‘‘সরকার ফেলতে যে ছাগল কেনার মতো রাজনীতিক কেনা চলছে, তা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। ষড়যন্ত্রের শুরুটা হয়েছিল বিদেশে। এ দেশের কিছু রাজনীতিক তাতে শামিল। ইতিহাস এই বিশ্বাসঘাতকদের ভুলবে না। আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেছি। এদের বিরুদ্ধে কোন পথে আইনি পদক্ষেপ করা হবে, তা আজ রাতের মধ্যেই ঠিক করে ফেলব।’’

এর পরেও কুর্সি কি বাঁচবে? দেশবাসীকে ইমরানের আশ্বাস, ‘‘একদম চিন্তা করবেন না। এক জন ‘কাপ্তান’-এর সব সময়েই কোনও না কোনও পরিকল্পনা থাকে। আর এ বার আমার একাধিক পরিকল্পনা আছে। ঈশ্বর সহায় হলে কাল আমরা জিতবই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement