কাশ্মীর নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ দাবি। ছবি: পিটিআই
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘কাশ্মীর মধ্যস্থতা’র প্রস্তাবে উৎফুল্ল পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। কাশ্মীর নিয়ে ইসলামাবাদ বরাবর যে সুরে কথা বলে এসেছে তা ওয়াশিংটনেও ফের এক বার শুনিয়েছেন ইমরান। তাঁর মতে, তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশীর মধ্যে এমন একটি বিতর্কিত বিষয়ের কখনই সমাধান হবে না।
সোমবার হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। সেখানে কাশ্মীর নিয়ে মধ্যস্থতার কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। নরেন্দ্র মোদী তাঁকে সেই ভার দিয়েছেন বলেও দাবি করেন ট্রাম্প। যদিও, মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে ভারত। তার পরেই, নয়াদিল্লির ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টা চালাচ্ছে ওয়াশিংটন। কাশ্মীর নিয়ে ভারতের বরাবরের যে অবস্থান তার সঙ্গে ভারসাম্য রক্ষার কৌশল চালাচ্ছে মার্কিন প্রশাসন।
কিন্তু, ট্রাম্পের করা মন্তব্যে যেন নিজের সুরই খুঁজে পেয়েছে ইসলামাবাদ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইমরান জানিয়েছেন, ‘‘দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় কখনই কাশ্মীর সমস্যার সমাধান হবে না। জেনারেল মোশারফ ও অটলবিহারী বাজপেয়ীর সময় কাশ্মীর ইস্যুতে সমাধানের রাস্তা কিছুটা খুলেছিল। কিন্তু, তার পর থেকে দুই প্রতিবেশী দুই ভিন্ন মেরুর বাসিন্দা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার প্রেসিডেন্ড ডোনাল্ড ট্রাম্প এই সমস্যা সমাধানে বড় ভূমিকা নিতে পারেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা এই পৃথিবীর ১৩ লক্ষ মানুষের কথা তুলে ধরছি। যদি কোনও ভাবে সমস্যার সমাধান হয় তা হলে শান্তি ফিরবে।’’
আরও পড়ুন: কাশ্মীর নিয়ে বেঁফাস ট্রাম্প, ড্যামেজ কন্ট্রোলে মার্কিন প্রশাসন, ক্ষমা চাইলেন কংগ্রেসের সদস্য
আরও একধাপ এগিয়ে সাক্ষাৎকারে ইমরান বলেন, ‘‘যদি ভারত পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ করে তা হলে পাকিস্তানও তা করবে। দু’দেশের মধ্যে পরমাণু যুদ্ধ হলে তা হবে আত্মহত্যার সামিল।’’ পুলওয়ামা হামলার পর থেকে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের তিক্ততার মাত্রা বেড়েছে। তা নিয়ে ইমরান খান বলেন, ‘‘গত ফেব্রুয়ারিতেই একটা ঘটনা ঘটেছে, তার জন্য এখনও দু’দেশের সীমান্তে উত্তেজনা রয়েছে। তার পর থেকেই আমার মনে হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই হচ্ছে একমাত্র শক্তিধর দেশ যে কাশ্মীর ইস্যুর সমাধান করতে পারে। গত ৭০ বছরে আমরা সভ্য প্রতিবেশীর মতো বাস করতে পারিনি, তার কারণ এই কাশ্মীর সমস্যাই।’’
এটাই অবশ্য প্রথম নয়। এর আগেও কাশ্মীর বিবাদ মেটাতে বার বার তৃতীয় পক্ষ বা রাষ্ট্রপুঞ্জের হস্তক্ষেপ চেয়ে বসেছে পাকিস্তান। মার্কিন প্রেসিডেন্ডের সঙ্গে প্রথম বৈঠকে সেই পথে হাঁটলেন ইমরান খানও। কাশ্মীর নিয়ে ভারত অবশ্য বরাবরই দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পক্ষেই সওয়াল করে এসেছে। সীমান্ত সন্ত্রাস বন্ধ হলে দু’দেশের মধ্যে আলোচনার দরজা খুলতে পারেও বলে জানিয়ে দিয়েছে নয়াদিল্লি।
আরও পড়ুন: আমেরিকাকে লাদেনের খোঁজ দিয়েছিল পাক গুপ্তচর সংস্থাই! বিস্ফোরক দাবি ইমরানের