ফাইল চিত্র।
পাকিস্তানে ১৯৪৭ সাল থেকে কোনও প্রধানমন্ত্রীই পাঁচ বছরের মেয়াদ সম্পূর্ণ করতে পারেননি। ইমরান খানও পারলেন না। অক্ষুণ্ণ থাকল ইতিহাসের ধারা। তবে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে অনাস্থা ভোটে হেরে নতুন নজির গড়লেন ইমরান। তিনিই প্রথম পাক প্রধানমন্ত্রী, যিনি অনাস্থা ভোটে হেরে প্রধানমন্ত্রিত্ব খোয়ালেন।
পাক রাজনীতির ময়দানে এর আগে কেয়ারটেকার প্রধানমন্ত্রীও হয়েছেন অনেকে। কারও মেয়াদ ছিল ১৩ দিন তো কারও বা ৫৭ দিন। অনেকে আবার স্রেফ প্রেসিডেন্ট বা সেনাপ্রধানের রোষের মুখে পড়েও গদি খুইয়েছেন। কিন্তু পূর্ণ মেয়াদ ক্ষমতায় না থাকতে পারলেও অনাস্থা ভোটে হেরে এর আগে প্রধানমন্ত্রীর পদ হারাননি কেউই। সে দিক থেকে নতুন রেকর্ড ইমরানের।
পাক ক্রিকেট দলের অধিনায়ক থেকে ইমরানের রাজনীতিবিদ হওয়ার গল্প নিছকই সামান্য নয়। পাকিস্তান মুসলিম লিগের নেতাদের দুর্নীতির উদাহরণ টেনে এবং দেশের জনগণকে ‘নয়া পাকিস্তান’ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়ে ২০১৮ সালে নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় আসে ইমরান নেতৃত্বাধীন তেহরিক-এ-ইনসাফ। ২২তম পাক প্রধানমন্ত্রী হন ইমরান। পাক সেনাবাহিনীর প্রিয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উত্থান হওয়ার পরেও গত বছর থেকে সেনাপ্রধান এবং শীর্ষ কমান্ডারদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় ইমরানের। আর তখন থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে ধিকিধিকি ক্ষোভের আগুন জ্বলতে শুরু করে পাক সামরিক মহলে।
এর পর একাধিক বিতর্কের মুখে পড়ে নিজের দলের অনেকের কাছেও আস্থা হারান তিনি। সুযোগ পেয়ে ইমরানের বিরুদ্ধে তৈরি হয় বিরোধী ঐক্য জোট। গত ২৮ মার্চ পাক পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির অধিবেশনের শুরুতেই ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করে সম্মিলিত বিরোধী পক্ষ। এর পর বিরোধীদের ঠেকাতে নির্দিষ্ট দিনে ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল করেন ডেপুটি স্পিকার। কিন্তু বাধ সাধে সুপ্রিম কোর্ট। অনাস্থা প্রস্তাব বাতিলকেই অসাংবিধানিক বলে আবার অনাস্থা ভোট করানোর নির্দেশ দেয় সে দেশের শীর্ষ আদালত। শনিবার রাতে সেই অনাস্থা ভোটেই ম্যাচ হারলেন ইমরান।