(বাঁ দিকে) ইমরান খান। তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবি (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
খাবারের সঙ্গে ‘টয়লেট ক্লিনার’ মিশিয়ে খাওয়ানো হয়েছে তাঁর স্ত্রীকে, এমনটাই অভিযোগ করলেন পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জেলবন্দি ইমরান খান। তিনি জানিয়েছেন, ‘টয়লেট ক্লিনার’ মেশানো ওই খাবার খেয়ে তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁর পেটে সংক্রমণ হয়েছে ওই খাবারের কারণে।
এর আগে জেল থেকেই পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ইমরান। তাঁর স্ত্রীকে আটক করার খবর পেয়ে তিনি জানিয়েছিলেন, স্ত্রীর কিছু হলে তিনি কাউকে ছেড়ে দেবেন না। একাধিক মামলায় অভিযুক্ত ইমরান বর্তমানে পাকিস্তানের আদিয়ালা জেলে বন্দি। দুর্নীতির মামলার শুনানি চলাকালীন স্ত্রীর খাবারে ‘টয়লেট ক্লিনার’ মেশানোর অভিযোগ করেছেন তিনি।
একটি দুর্নীতি মামলায় এবং অবৈধ বিয়ে সংক্রান্ত একটি মামলায় অভিযুক্ত ইমরান-পত্নী বুশরা বর্তমানে ইসলামাবাদ সংলগ্ন শহরতলি বানি গালা এলাকার বাড়িতে গৃহবন্দি। সেই বন্দিদশাতেই তাঁকে ওই খাবার খাওয়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ। ইমরান জানিয়েছেন, শওকত খানম হাসপাতালের মেডিক্যাল আধিকারিক অসীম ইউসুফ ইসলামাবাদের হাসপাতালে বুশরার শারীরিক পরীক্ষা করানোর সুপারিশ করেছেন। কিন্তু জেল কর্তৃপক্ষ পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সে বুশরাকে রেখে শারীরিক পরীক্ষা করানোর বিষয়ে অনড় ছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী।
শুনানি চলাকালীন বিচারক ইমরানকে জেলবন্দি অবস্থায় সাংবাদিকদের সঙ্গে বেশি কথা না বলার পরামর্শ দেন। এর জবাবে ইমরান জানান, তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে বেশি কথা বলেন, কারণ তা না করলে তাঁর বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা হয়। অন্তত ১০ মিনিট সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি চেয়েছেন ইমরান।
এর আগে স্ত্রীর আটক হওয়ার খবর পেয়ে সংবাদমাধ্যমকে ইমরান বলেছিলেন, ‘‘সেনাপ্রধান আসিম মুনির আমার স্ত্রীকে আটক করায় সরাসরি যুক্ত। যদি আমার স্ত্রীর কিছু হয়, আমি আসিম মুনিরকে ছেড়ে দেব না। যত দিন বেঁচে থাকব আসিম মুনিরকে ছাড়ব না। উনি যা যা অসাংবিধানিক এবং অবৈধ পদক্ষেপ করেছেন, সব ফাঁস করে দেব।’’ এর পর জেলে বসে আবার নতুন অভিযোগ তুললেন ইমরান।
উল্লেখ্য, ইমরানের সঙ্গে পাকিস্তানের সেনার সম্পর্ক একেবারেই মধুর নয়। এক সময় এই সেনার সমর্থনেই পাকিস্তানের মসনদে বসেছিলেন তিনি। কিন্তু ক্রমে সেই সম্পর্কের অবনতি হয়। সেনার মদতেই তাঁকে প্রধানমন্ত্রিত্ব ছাড়তে হয়েছে বলে দাবি করেন ইমরান। কিছু দিন আগে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে সর্বাধিক আসন পেয়েছিলেন ইমরানের দল সমর্থিত নির্দল প্রার্থীরা। কিন্তু শাহবাজ় শরিফের দল বিলাবল ভুট্টো জ়ারদারির দলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গঠন করে। ইমরান শিবিরের বক্তব্য, তাদের ক্ষমতা থেকে দূরে সরিয়ে রাখতেই ওই দুই দলকে মিলিয়ে দিয়েছে সেনা।