ফাইল চিত্র
দেশের অর্থনৈতিক স্থিতি তলানিতে। চরমে পৌঁছেছে দেশবাসীর ক্ষোভ। তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা। এই পরিস্থিতি থেকে দেশকে উদ্ধার করতে মরিয়া শ্রীলঙ্কার প্রশাসন আগেই আর্থিক সাহায্য চেয়ে দ্বারস্থ হয়েছিল আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার (আইএমএফ)-এর। তবে প্রথমে সে ভাবে সাড়া না-মিললেও এ বার তাদের পাশে দাঁড়ানোর চিন্তাভাবনা করছেন অর্থ ভান্ডার কর্তৃপক্ষ— মঙ্গলবার টুইট-বার্তায় এমনই ইঙ্গিত শ্রীলঙ্কার অর্থমন্ত্রকের। এ দিন ওয়াশিংটনে আইএমএফ-এর সদর দফতরে প্রতিবেশী রাষ্ট্রটির হয়ে দরবার করার পাশাপাশি যথাসাধ্য সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনও। ভারতের এই ভূমিকার প্রশংসা করেছে আইএমএফ।
শ্রীলঙ্কার অর্থমন্ত্রী আলি সাবরির নেতৃত্বে ওয়াশিংটনে আইএমএফ-এর সদর দফতরে পৌঁছেছে শ্রীলঙ্কার প্রতিনিধি দল। দেশের প্রায় শূন্য অর্থ ভান্ডারের খানিকটা হাল ফেরানোর পাশাপাশি খাবার, জ্বালানি এবং ওষুধের আমদানির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ পাওয়ার আশায় সোমবার থেকে আইএমএফ কর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠকে বসছেন তাঁরা। সাবরির সহযোগী শমির জ়াভাহির টুইট, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতিতে সরবরাহ ব্যবস্থার হাল ফেরাতে র্যাপিড ফিন্যান্সিং ইনস্ট্রুমেন্ট বা আরএফআই পদ্ধতিকে কাজে লাগানোর প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। ...ভারতও শ্রীলঙ্কাকে আরএফআই পাইয়ে দেওয়ার জন্য দরবার করেছে এবং হয়তো আইএমএফ বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখবে।’’
ইতিমধ্যেই শ্রীলঙ্কাকে প্রায় দেড়শো কোটির উপরে সাহায্য করেছে ভারত। যার মধ্যে অবিলম্বে বর্তমান সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে জ্বালানি, খাবার এবং ওষুধ কেনার জন্য ধারের ব্যবস্থাও রয়েছে। আইএমএফ-ডব্লুবি স্প্রিং বৈঠকে যোগ দিতে এখন ওয়াশিংটনে সীতারামন। সেখানে শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি নিয়ে সাবরির সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে অর্থ মন্ত্রকের তরফে।
লাগাতার বিক্ষোভের মুখে পড়ে সোমবারই ক্যাবিনেট ঢেলে সাজিয়েছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। এ বার ‘স্বচ্ছ প্রশাসন গড়তে’ সংবিধানে একাধিক সংশোধনী আনার প্রস্তাব আনলেন তিনি। তাঁর দফতরের তরফে জারি করা এক বিবৃতিতে এই কথা জানানো হয়েছে। সোমবারই অর্থনৈতিক পর্যায়ে একাধিক ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায় স্বীকার করে নিয়েছেন রাজাপক্ষে। তবে দেশের হাল ফেরাতে যে তিনি বদ্ধপরিকর তা-ও জানিয়েছেন তিনি।
এ দিকে মঙ্গলবার বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মধ্য শ্রীলঙ্কার রামবুক্কানা। এই ঘটনায় পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধে এক জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। জখম হয়েছেন অন্তত ১৩ জন। অভিযোগ, একটি ব্যস্ত সড়ক অবরোধ করে তেল-সঙ্কটের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন বিক্ষোভকারীরা। হঠাৎ পুলিশকে নিশানা করে পাথর ছুড়তে শুরু করেন তাঁরা। পাল্টা তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে পুলিশ।