প্রতীকী ছবি।
মার্কিন ড্রোন হানায় ইরানের কম্যান্ডার জেনারেল কাসেম সোলেমানি নিহত হওয়ার জেরে রীতিমতো উদ্বিগ্ন সাউথ ব্লক। আমেরিকা এবং ইরানের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলে দিল্লির পক্ষে কোনও পক্ষ নেওয়া কার্যত অসম্ভব। ওয়াশিংটনের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি পাকা করতে এক বছর ধরে লাগাতার চেষ্টা চালাচ্ছে ভারত। অন্য দিকে, ইরানের সঙ্গে যে সখ্যতা মনমোহন সিংহ সরকারের জমানায় তৈরি হয়েছিল, তা এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে মোদী সরকার। চাবাহার বন্দর ব্যবহার করার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে যা পাকিস্তানকে এড়িয়ে আফগানিস্তান তথা গোটা পশ্চিম এশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কে এক নতুন দিগন্ত খুলে দিতে চলেছে। বড় মাপের বিনিয়োগও হয়েছে এই বন্দর নির্মানের জন্য। ইরান থেকে তেল আমদানির প্রশ্নে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বলবৎ হওয়ার আগে পর্যন্ত তেহরানই ছিল এ ক্ষেত্রে নয়াদিল্লির সবচেয়ে বড় ভরসার জায়গা।
এই অবস্থায় প্রায় গোটা দিন নিঃশব্দ থাকার পরে সন্ধ্যায় বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এক সাবধানী বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ‘‘আমাদের নজরে এসেছে যে, ইরানের এক পদস্থ নেতাকে আমেরিকা হত্যা করেছে। ওই অঞ্চলে শান্তি, সুস্থিতি এবং নিরাপত্তা ভারতের জন্য অত্যন্ত জরুরি। এখন সংঘাত আরও না-বাড়াটাই দরকার।’’ পশ্চিম এশিয়ায় ৮০ লক্ষ ভারতীয় বসবাস করেন। এখানে কোনও বড় মাপের অশান্তি হলে নব্বই সালের পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা। সে সময়ে ইরাক-আমেরিকা যুদ্ধের জেরে ১ লক্ষ ১০ হাজার ভারতীয়কে বিশেষ বিমানে করে ফেরাতে হয়েছিল।
উপসাগরীয় অঞ্চল থেকে ভারতে বছরে চার হাজার কোটি ডলার বিদেশি মুদ্রা আসে যা দেশের মোট বিদেশি মুদ্রা আমদানির অর্ধেকেরও বেশি। তা ছাড়া, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার চাপে ভারত এই মুহূর্তে ইরান থেকে তেল আমদানি কমিয়ে দিয়েছে ঠিকই। কিন্তু ওমান ও পারস্য উপসাগরের মধ্যবর্তী ক্ষুদ্রাকার হরমুজ প্রণালীর মাধ্যমে তেল উত্তোলনের প্রশ্নে ভারতের নির্ভরতা যথেষ্ট। অশান্তি বাড়লে এই প্রণালী বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা যথেষ্ট।