শেখ হাসিনা। —ফাইল চিত্র।
কোটা সংস্কার আন্দোলন পর্বে আহত প্রতিবাদীদের চিকিৎসা করতে বারণ করেছিলেন বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের নেত্রীর বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ আনল সে দেশের অন্তর্বর্তী সরকার। ‘দ্য ডেলি স্টার’-এর প্রতিবেদন অনুসারে, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল (আইসিটি)-এর প্রধান আইনজীবী মহম্মদ তাজুল ইসলাম ট্র্যাইবুনালকে জানিয়েছেন যে, হাসিনা আহত প্রতিবাদীদের চিকিৎসা না-করার নির্দেশ দিয়েছিলেন চিকিৎসকদের।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় বহু প্রতিবাদী আক্রান্ত হয়ে ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ট্রমাটোলজি অ্যান্ড অর্থোপেডিক রিহ্যাবিলিটেশন বা ‘নিটর’-এ ভর্তি ছিলেন। আহতদের সেখানে দেখতেও গিয়েছিলেন হাসিনা। স্থানীয়দের একাংশের কাছে হাসপাতালটি পঙ্গু হাসপাতাল নামেও পরিচিত। আইসিটির-র প্রধান আইনজীবীর দাবি, হাসপাতালে গিয়ে হাসিনা আক্রান্ত প্রতিবাদীদের চিকিৎসা না-করার পাশাপাশি তাঁদের না-ছাড়ারও নির্দেশ দেন চিকিৎসকদের।
যে সমস্ত প্রতিবাদীর মৃত্যু হয়েছিল, ট্রাইবুনাল তাঁদের মৃত্যু-শংসাপত্র দেখতে চায়। প্রধান আইনজীবী জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যথাযথ নথি দিতে পারেননি। বহু ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ লুকোনো হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। আইসিটি-র প্রধান আইনজীবীর দাবি, যাঁদের গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছিল, তাঁদের মৃত্যুর শংসাপত্রে লেখা ছিল দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে। বহু দেহের ময়নাতদন্ত হওয়ার আগেই সেগুলি সরিয়ে ফেলা হয় বলেও দাবি করেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কার আন্দোলন পর্বে ‘গণহত্যা এবং মানবতা-বিরোধী অপরাধ’-এর অভিযোগে দায়ের হওয়া দু’টি মামলায় গত অক্টোবর মাসে হাসিনা-সহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইবুনাল। ১৮ নভেম্বরের মধ্যে হাসিনা-সহ সব অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে ট্রাইবুনালে হাজির করানোর নির্দেশ দেওয়া হয় তদন্তকারী সংস্থাকে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলাগুলির বিচারের উদ্দেশ্যে ২০১০ সালে হাসিনার আমলেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল গঠিত হয়েছিল। এই ট্রাইবুনালে ইতিমধ্যে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অনেকের বিচার হয়েছে। ফাঁসি-সহ বিভিন্ন মেয়াদের কারাবাসের শাস্তি কার্যকর হয়েছে। হাসিনা জমানায় মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত আরও কয়েক জনের বিচারও ট্রাইবুনালে চলছিল।