গত মাসেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু প্রবল রাজনৈতিক চাপে শেষমেশ সেই সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে এসেছিলেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশ্য কাল ফের স্পষ্ট করে দিলেন, অভিবাসন সংক্রান্ত কঠোর নীতি থেকে তাঁর প্রশাসনের সরে আসার প্রশ্ন নেই। আমেরিকায় যে সব অভিবাসী অবৈধ ভাবে থাকছেন, আগামী কাল থেকে তাঁদের ব্যাপক ধরপাকড় শুরু হবে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। গত কাল হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সামনে প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘‘বহু মানুষ এ দেশে অবৈধ ভাবে ঢুকছেন, থাকছেন। আমরা তাঁদের বৈধ ভাবে ফেরত পাঠাতে চাই।’’ একমাত্র এই পদ্ধতির মাধ্যমেই দেশ থেকে দাগি অপরাধী এবং দুষ্কৃতীদের তাড়ানো সম্ভব বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প।
বছরখানেক ধরেই দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকা থেকে মানুষের স্রোত আসছে শুরু করেছে আমেরিকায়। তাঁরা অধিকাংশই অবৈধ ভাবে সীমান্ত পেরিয়ে আমেরিকায় ঢুকেছেন বলে প্রথম থেকেই অভিযোগ করে এসেছে ট্রাম্প প্রশাসন। একই সঙ্গে প্রেসিডেন্টের দাবি, শিশু ও পরিবারের আড়ালে আসলে পড়শি দেশগুলি থেকে দাগি অপরাধীরা আমেরিকায় ঢুকেছে। গত কয়েক মাসে এই ধরনের অবৈধ অভিবাসী পরিবারগুলিকে চিহ্নিত করে তাদের নিজেদের দেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিল মার্কিন আদালত। অভিযোগ বহু বার কোর্টের নির্দেশ পাঠানো সত্ত্বেও ওই সব পরিবার হাজিরা দিতে আসেনি।
সেই সব পরিবারের লোকজনকেই এ বার মার্কিন অভিবাসন এবং শুল্ক দফতরের (আইসিই) আধিকারিকেরা গ্রেফতার করবেন বলে গত মাসে টুইটারে ঘোষণা করেছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু দেশ জুড়ে ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। মূলত যে দশটি শহরে এই ধড়পাকড় অভিযান হবে, সেই শহরগুলির মেয়রদের অধিকাংশই (মূলত ডেমোক্র্যাট) আইসিই সদস্যদের সঙ্গে সহযোগিতা করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। সরকারি আধিকারিকেরা আটক করতে এলে আইনজীবীর পরামর্শ ছাড়া অভিবাসীরা যাতে কথা না বলেন, সেই পরামর্শও তখন দিয়েছিলেন ওই সব শহরের মেয়ররা। এর পরেই ওই অভিযান স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেন ট্রাম্প। কিন্তু গত কাল তিনি আবার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী কাল ওই দশ শহরেই ফের ধরপাকড় অভিযান শুরু করবেন আইসিই অফিসারেরা। অভিযান চলাকালীন শিশুরা যাতে তাদের পরিবারের থেকে বিচ্ছিন্ন না-হয়, সে জন্য প্রশাসন সতর্ক রয়েছে বলে আগেভাগেই জানিয়ে রেখেছেন ট্রাম্প। তবে অভিবাসী অধিকার রক্ষাকারী সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, আদালতে হাজিরার নোটিস বেশিরভাগ পরিবারের কাছেই পৌঁছয়নি। ওই সংস্থাগুলির অনুরোধ, যাঁরা হাজিরা দিতে যাননি, তাঁদের যেন এক বার আদালতে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। তার আগে যেন অভিযান শুরু না করা হয়। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সেই আবেদনে সাড়া দেবেন না বলেই মনে করা হচ্ছে। আপাতত কোর্টের নির্দেশ অমান্য করেছেন এমন দু’হাজার অভিবাসী সরকারি তালিকায় রয়েছেন। তাঁদেরই প্রশাসন সবচেয়ে আগে নিশানা করবে বলে মনে করা হচ্ছে।