তাণ্ডব: উত্তাল সমুদ্র। রবিবার মায়ামি সৈকতে।ছবি: রয়টার্স
জনমানবশূন্য ফ্লোরিডায় আছড়ে পড়ল ইরমা। এখনও পর্যন্ত ৩ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে।
এক দিকে অতলান্তিক মহাসাগর, অন্য ধারে মেক্সিকো উপসাগর। সমুদ্রের মধ্যে খানিক হুকের মতো ঢুকে এসেছে ছবির মতো সুন্দর ফ্লোরিডা, দক্ষিণ-পূর্ব আমেরিকার একেবারে শেষ প্রান্ত। যদিও বছরভর পর্যটকে ছেয়ে থাকা এই ফ্লোরিডাকে এখন চেনা দায়। ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে ধ্বংসলীলা চালিয়ে রবিবার ফ্লোরিডায় আছড়ে পড়ল ঘূর্ণিঝড় ইরমা। আতঙ্কে ঘর ছেড়েছেন লাখো ফ্লোরিডাবাসী। কোথাও নির্জন পথে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে গাছ, কোথাও আবার রাস্তা না সমুদ্র চেনা দায়। উড়ে গিয়েছে ঘরের চাল। কোনও বাড়ি ভগ্নস্তূপ।
আরও পড়ুন: কী দশা করেছে ভয়াল ইরমা, দেখুন সেই ছবি
মাঝে শক্তি হারিয়ে ক্যাটেগরি থ্রি-তে পরিণত হয়েছিল ইরমা। কিন্তু ফের গতি বাড়িয়ে ক্যাটেগরি ফোরের আকার নিয়েছে সে, জানিয়েছে ‘দ্য ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস’। হাওয়ার গতি ঘণ্টায় ২০৯ কিলোমিটার। ৬৩ লক্ষ বাসিন্দাকে আগেভাগেই বলা হয়েছিল, আপাতত কোনও নিরাপদ জায়গায় চলে যেতে। অনেকেই তাই ঘরছাড়া। কেউ-কেউ আবার নিজের বাড়িতেই সেঁধিয়েছেন। জন হিনস যেমন। বললেন, ‘‘হাওয়ার এমন দাপট, যেন কেউ নাগাড়ে ধাক্কা মেরে যাচ্ছে। কী বীভৎস আওয়াজ! আর সেটা যেন ক্রমশ তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে।’’ ওয়েন প্লগহফ্ট আবার বিমানের টিকিট পাননি। আরও তিন জনের সঙ্গে মার্কো দ্বীপের বাড়িতেই রয়েছেন। বললেন, ‘‘ঠিক সামলে নেব। পর্যাপ্ত খাবার-পানীয় জল জোগাড় করে রেখেছি।’’
বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্তা ব্রুক লং অবশ্য বলেছিলেন, যাঁরা ফ্লোরিডা ছেড়ে যাননি, তাঁরা ভয়ানক বিপদে। তাঁর কথায়, ‘‘আপনাদের নিজেদের নিরাপত্তা, নিজেদের হাতে। যত ক্ষণ না ঝড় থামছে, কিছুই করার নেই।’’ পরে এক ডেপুটি শেরিফের মৃত্যুর খবর মিলেছে। ৪২ বছরের জুলি ব্রিজেস উদ্ধারকাজেই গিয়েছিলেন।
ফ্লোরিডায় ১ লক্ষ ২০ হাজার ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিকের বাস। তাঁদের একটা বড় অংশ আবার থাকেন মায়ামি, ফোর্ট লডরডেল ও ট্যাম্পায়। তাঁদের সরিয়ে আনা হয়েছে আটলান্টায়। হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছে ভারতীয় দূতাবাস। আটলান্টা পাঠানো হয়েছে দূতাবাসের শীর্ষকর্তাদের। পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন ভারতীয় রাষ্ট্রদূত নভতেজ সারনা। আটলান্টার কন্ট্রোল রুম থেকে উদ্ধারে সাহায্য করছেন নিউ ইয়র্কে ভারতের কনসাল জেনারেল সন্দীপ চক্রবর্তী। আটলান্টার ইন্ডিয়ান কনস্যুলেটের পক্ষ থেকে টুইট করা হয়, ‘‘ইতিমধ্যেই অনেকে চলে এসেছেন। ২৪ ঘণ্টা খোলা আমাদের দফতর।’’ ত্রাণশিবির খুলেছে আটলান্টার তিনটি ভারতীয় সংগঠনও।