ঢাকার নয়া পল্টনে বিএনপি-র যুব সংগঠনের বিক্ষোভ সমাবেশ। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
সরকার জ্বালানি তেলের দাম এক ধাক্কায় বিপুল বাড়িয়ে দেওয়ায় শনি ও রবিবার ঢাকার নানা জায়গায় ছোট ছোট বিক্ষোভ সংগঠিত করে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও ছাত্র সংগঠন, যার মধ্যে বামপন্থীরাই ছিলেন নেতৃত্বে। সোমবার রাজধানীর রাস্তায় নেমে নজর কাড়ার মতো ভিড় টানল বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। দীর্ঘদিন পরে খালেদা জিয়ার দলের এ দিনের কর্মসূচি তাদের ভেঙে পড়া সংগঠনকে শক্তি জোগাবে এবং পরবর্তী নির্বাচনে উল্লেখযোগ্য শক্তি হিসাবে তুলে ধরতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আবার বিএনপির এই চাঙ্গা ভাবকে শাসক দল আওয়ামী লীগ ‘সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার চক্রান্ত’ বলে বর্ণনা করছে।
সরকার জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর আগেই ব্যয়সংকোচের যে সব নীতি নিয়েছে, বছর দু’য়েক বাদে তার বিরুদ্ধে পথে নেমে বরিশালের ভোলায় অবস্থান আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল বিএনপির যুব ও ছাত্র সংগঠন যথাক্রমে যুব দল ও ছাত্র দল। অবস্থানের পরে মিছিল করতে গেলে পুলিশ বিএনপির যুবকর্মীদের বাধা দেয়। তার পরে বচসার মধ্যে হঠাৎই গুলি চালিয়ে দেয়। এর ফলে ভোলার যুব দলের সভাপতি এবং এক কর্মী প্রাণ হারান। গুলিবিদ্ধ হন জনা ২০ কর্মী। সোমবার ঢাকার নয়াপল্টনে নিজেদের দফতরের সামনে যুব ও ছাত্র দল যে সমাবেশের ডাক দেয়, তাতে ‘পুলিশের হত্যাকাণ্ড’-এর পাশাপাশি জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ জানানো হয়। কিন্তু সরকার-বিরোধী এই সমাবেশে বিপুল ভিড় দেখা যায়। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির শেখ হাসিনার সরকারকে অবৈধ সরকার আখ্যা দিয়ে অভিযোগ করেন, জাল ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে তারা। তাদের নেতৃত্বে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া সম্ভব নয়। অভ্যুত্থানের মাধ্যমেই এই সরকারকে উৎখাত করবেন মানুষ।
এ দিকে বাম ছাত্র সংগঠনগুলি শাহবাগ চত্বরে জাতীয় জাদুঘরের সামনে রবিবার দুপুরে অবস্থান শুরু করে জানিয়েছিল, সরকার তেলের দামবৃদ্ধি ফিরিয়ে না-নেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। কিন্তু সন্ধ্যার সময়েই পুলিশ লাঠি চালিয়ে আন্দোলনকারীদের তুলে দেয়। পুলিশের এই ‘দমন-পীড়নের’ প্রতিবাদে এ দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে মিছিল বার করে ছাত্র সংগঠনগুলি। সরকারকে তারা জ্বালানি তেলের দামবৃদ্ধি ফিরিয়ে নিতে ৩ দিন সময় দিয়েছে। অন্যথায় বড় আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। সব মিলিয়ে জ্বালানি তেলের দামবৃদ্ধি নিয়ে এখন উত্তপ্ত বাংলাদেশ, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যাকে তাদের সরকার ফেলার চক্রান্ত আখ্যা দিচ্ছেন।