মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।
২ এপ্রিলকে আমেরিকার ‘মুক্তি দিবস’ হিসাবে ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর সেই দিনই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি পণ্যের উপর পাল্টা শুল্ক চাপানোর কথা জানিয়েছেন তিনি। এই ঘোষণার পরেই বিশ্বে বাণিজ্যযুদ্ধের দামামা বেজে গিয়েছে। ট্রাম্পের শুল্কনীতি নিয়ে খুশি নন বিশ্বনেতারা।
‘মূল্য চোকাতে হবে আমেরিকার মানুষকে’
অস্ট্রেলিয়ার উপরও ট্রাম্পের শুল্ক খাঁড়া নেমে এসেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, অস্ট্রেলিয়ার উপর তাঁর দেশ ১০ শতাংশ পাল্টা আমদানি শুল্ক ধার্য করবে। এই ঘোষণা ভাল ভাবে নেননি অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি অ্যালবানিজ়। তাঁর দাবি, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের জন্য আমেরিকার জনগণকে আরও বড় মূল্য চোকাতে হবে। তবে আমেরিকার মতো পাল্টা শুল্ক চাপানোর পথে হাঁটবেন না তিনি। অ্যালবানিজ়ের কথায়, ‘‘আমাদের সরকার পাল্টা শুল্ক আরোপের চেষ্টা করবে না। আমরা এমন কোনও প্রতিযোগিতায় নামব না।’’
‘লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত’
ট্রাম্পের শুল্কনীতির বিরুদ্ধে ‘লড়াই’ করতে তৈরি তাঁর দেশ, এমনই জানালেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নে। তাঁর দাবি, আমেরিকার এই শুল্কনীতি লক্ষ লক্ষ কানাডাবাসীকে সরাসরি প্রভাবিত করবে। কার্নের কথায়, ‘‘আমরা পাল্টা পদক্ষেপ করে এই শুল্কের বিরুদ্ধে লড়াই করব।’’
‘বাণিজ্যযুদ্ধ কারও স্বার্থে নয়’
ব্রিটেনের উপরও ১০ শতাংশ শুল্ক চাপানোর কথা ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প। সেই দেশের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বলেন, ‘‘আমরা সকল পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত আছি। কোনও বিষয়কেই লঘু করে দেখছি না।’’
‘উভয় পক্ষেরই ক্ষতি করবে’
ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের ঘোষণা কোনও পক্ষের জন্যই ভাল হবে না বলে মনে করছে জার্মানি। তারা সতর্ক করে দিয়ে জানিয়েছে, এই নীতিতে উভয় পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
‘উন্মুক্ত বিশ্বের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’
স্পেনও ট্রাম্পের শুল্ক নীতির তীব্র সমালোচনা করেছে। সে দেশের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ় জানিয়েছে, এই পরিস্থিতিতে তিনি তাঁর দেশের কোম্পানি এবং কর্মীদের রক্ষা করবেন। উন্মুক্ত বিশ্বের জন্য তিনি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ!
‘বাণিজ্যযুদ্ধ চাই না’
সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী উল্ফ ক্রিস্টারসন জানান, তাঁর দেশে বিশ্বের ক্রমবর্ধমান বাণিজ্যপথে বাধা হতে চায় না। ক্রিস্টারসনের কথায়, ‘‘আমরা বাণিজ্যযুদ্ধ চাই না। আমরা আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য এবং সহযোগিতার পথে ফিরে যেতে চাই। কারণ, আমরা চাই, আমার দেশের মানুষ যেন আরও ভাল ভাবে জীবনযাপন করতে পারেন।’’ একই পথে হাঁটতে চায় আয়ারল্যান্ডও। আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ খোঁজার পক্ষে তারা। আমেরিকার ‘বন্ধু’ ইতালিও ‘বাণিজ্যযুদ্ধ’ চায় না। সে দেশের প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বলেন, ‘‘আমরা আমেরিকার সঙ্গে একটি চুক্তি করার যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। এই চুক্তির লক্ষ্যই হবে বাণিজ্যযুদ্ধ এড়ানো।’’