ছবির মতো অপূর্ব সমুদ্রসৈকত। দারুণ সব সুস্বাদু খাবার। বালির কথা উঠলে এগুলোই চোখের সামনে ভেসে ওঠে। মনে হয় ব্যাগ গুছিয়ে এখনই বেড়িয়ে পড়ি।
কিন্তু জানেন কি বালির আরও একটি আকর্ষণ রয়েছে। বালিতে একাধিক পরিত্যক্ত বিমান রয়েছে। যা পর্যটকদের কাছে বিশেষ আকর্ষণের।
বিমানগুলোর কোনওটা একেবারে সমুদ্রসৈকতে, কোনওটা সমুদ্রসৈকতের কাছে জঙ্গলে কোনওটা আবার বড় রাস্তার পাশে একেবারে লোকালয়ের মধ্যেই রয়েছে।
কে বা কারা, কখন এবং কী ভাবে বিমানগুলোকে এ সমস্ত জায়গায় নিয়ে এলেন? কেনই বা বিমানগুলোকে ফেলে রেখে চলেই বা গেলেন কেন? এ সব উত্তর অজানা।
এই বিমানগুলো নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে নানা কথা প্রচলিত রয়েছে। বিমানগুলোর রহস্য যাই থাক না কেন বালির পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ বিমানগুলো।
বালির দক্ষিণ কুতায় যেমন লোকালয়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে রয়েছে একটি বোয়িং ৭৩৭। বিমানের পিছনেই রয়েছে বড় রাস্তা। কবে থেকে এবং কী ভাবে বিমানটি লোকালয়ের মধ্যে এল তা স্থানীয়দের অজানা।
কারও মতে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বিমানটিতে বাড়ি বানানোর উদ্দেশ্যে নিয়ে এসেছিলেন। কারও মতে এই বিমানে জাদুঘর কিংবা সিনেমা হল বানানোর কথা ছিল। কেউ আবার জানান, খুব তাড়াতাড়ি রেস্তোরাঁয় পরিণত হবে বিমানটি।
আপাতত স্থানীয়দের অধীনেই রয়েছে বিমানটি। কিছু টাকার বিনিময়ে পর্যটকেরা বিমানের ভিতরে ঢুকে ঘুরে দেখতে পারেন।
দ্বিতীয় পরিত্যক্ত বিমানটি রয়েছে বালির এক উপদ্বীপে। সেখানকার পান্ডায়া সমুদ্রসৈকতের একেবারে কাছে রয়েছে বিমানটি। সমুদ্রসৈকতের একেবারে কাছে থাকায় বালির সবচেয়ে জনপ্রিয় পরিত্যক্ত বিমান এটিই।
এমন একটি জায়গায় বিমানটি কী ভাবে অবতরণ করল বা কী ভাবে সেটি এখানে এল তা অত্যন্ত বিস্ময়ের। অনেকের ধারণা, বিমানের বিভিন্ন অংশ আলাদা ভাবে নিয়ে এসে জোড়া লাগানো হয়েছে।
শোনা যায়, বিমানটির মালিক অস্ট্রেলিয়ার এক বাসিন্দা। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল বিমানটিকে সমুদ্রসৈকত রেস্তোরাঁয় পরিণত করা। কিন্তু অনুমতি না মেলায় রেস্তোরাঁর কাজ এখনও শুরু হয়নি।
আবার অনেকের মতে, বিমানের চালক টাকা হাতিয়ে চম্পট দিয়েছেন। ফেলে গিয়েছেন বিমানটিকে। এই বিমানের ভিতরে ঘুরে দেখার অবশ্য অনুমতি নেই।
ম্যাকডোনেল ডগলাস ডিসি ১০। তৃতীয় পরিত্যক্ত বিমান। বালির গেট ৮৮ মলের ছাদে রয়েছে বিমানটি। এই মলের ছাদে যেতে গেলে এলিভেটরে উঠতে হবে। এলিভেটর আপনাকে পৌঁছে দেবে বিমানের কাছে।
ব্রিটিশ ক্যালেডোনিয়ান এয়ারওয়েজ প্রথম বিমানটি কেনে। তার পর সেটি একটি আমেরিকার সংস্থার কাছে বিক্রি করে দেয়। ওই সংস্থা এটিকে পণ্যবাহী বিমানে পরিণত করে। তার পর সেটি জিম্বাবোয়ের একটি সংস্থার কাছে বিক্রি করে দেয়।
বেশ কিছু দিন ওই সংস্থার হয়ে কাজ করার পর বিমানটিকে বাতিল করা হয়। তার পর থেকেই পরিত্যক্ত বিমানটির ঠাঁই ওই মলের ছাদে।
পশ্চিম বালিতে রয়েছে পরিত্যক্ত বোয়িং ৭৩৭-২০০ বিমান। ভুতুড়ে বিমান হিসাবেই অধিক পরিচিত এটি। জেমব্রানার ফাঁকা মাঠের মধ্যে বিমানটি রয়েছে। এই বিশাল ফাঁকা মাঠে আবাসন গড়ে উঠছে। সম্ভবত বিমানটিকেও ভিলাতে পরিণত করার পরিকল্পনা ছিল।
বিমানটি ঘুরে দেখার জন্য কোনও টাকা লাগে না। তবে কেবিনের ভিতরে ঢোকার অনুমতি নেই।