নির্দেশিকায় বলা আছে, ক্যাথলিক চার্চ সমকামীদের মর্যাদা দেয়। —প্রতীকী চিত্র।
ইটালিতে এখন থেকে সমকামী পুরুষরাও যাজক হতে পারবেন। তবে যাজক হওয়ার পরে আর সমকামী জীবন যাপন করতে পারবেন না বা সমকামিতার প্রচার করতে পারবেন না। ইটালিতে সম্প্রতি বিশপ সম্মেলনে এই নতুন নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে ভ্যাটিকানের সিলমোহর নিয়েই। বৃহস্পতিবার অনলাইনে প্রকাশিত এই নির্দেশিকায় বলা আছে,
ক্যাথলিক চার্চ সমকামীদের মর্যাদা দেয়। কিন্তু হোলি অর্ডার অথবা সেমিনারিতে থেকে সমকামিতায় লিপ্ত হওয়া যাবে না।
ক্যাথলিক চার্চ বরাবরই সমকামকে ‘অপ্রাকৃতিক’ বলে দেগে দিয়ে এসেছে। সে দিক থেকে সমকামীদের যাজক হওয়ার অনুমতি দেওয়াটা একটা বড় মাইলফলক বলে মনে করছেন অনেকে। পাশাপাশি, যে সব বিধিনিষেধের কথা একই সঙ্গে বলা হয়েছে, তাতে ভুরুও কুঁচকেছে অনেকের। মনে রাখা যেতে পারে, ২০১৩ সালে পদাসীন হয়েই পোপ ফ্রান্সিস বেশ কিছুটা গ্রহণমূলক অবস্থান নিয়েছিলেন। এ কথাও বলেছিলেন যে, ‘‘কেউ যদি সমকামী হয়ে ঈশ্বরের সন্ধান করেন এবং যথেষ্ট সদিচ্ছা নিয়ে করেন, আমি তাঁকে বিচার করার কে?’’ ভ্যাটিকানের বয়ানে সে-ই ছিল এক বড় বদল। তবে পোপ ফ্রান্সিস ইদানীং অনেক বেশি রক্ষণশীল হয়ে গিয়েছেন বলেও খবর। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, গত জুন মাসে ইটালির বিশপদের সঙ্গেই একটি বৈঠকে তিনি সমকামীদের নিয়ে অপমানসূচক মন্তব্য করেছিলেন। কিন্তু যাজক পদে সমকামীদের প্রবেশ-পথ শেষ পর্যন্ত আটকালেন না। আমেরিকার ক্যাথলিক এলজিবিটিকিউ সংগঠনগুলির অনেকেই এই পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে। ‘নিউ ওয়েজ় মিনিস্ট্রি’ সংস্থার হয়ে ফ্রান্সিস ডিবার্নাডো যেমন বলছেন, ‘‘এটা সামনের দিকে একটা বড় পদক্ষেপ। অনেক ধোঁয়াশা এর ফলে পরিষ্কার হল।’’ আমেরিকারই জেসুইট ফাদার জেমস মার্টিন মনে করাচ্ছে, এই প্রথম ভ্যাটিকান-অনুমোদিত কোনও নথিতে বলা হল যে, যাজক পদে কোনও প্রার্থীর যোগ্যতা বিচারে তাঁর সমকামিতা অন্তরায় হবে না।
৬৮ পাতার নতুন নির্দেশিকা বলছে, পৃথিবী জুড়ে যুবসমাজের ব্যক্তিসত্তায় সমকামিতার গুরুত্বকে বুঝতে হবে, সার্বিক সম্প্রীতি নিশ্চিত করতে হবে। সমকামী প্রবণতাযুক্ত যাঁরা যাজক হতে আসবেন, তাঁদের প্রতি চার্চের মর্যাদাপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গিও থাকবে। তবে তার মানে এই নয় যে, যাজকেরা সমকামিতায় লিপ্ত থাকবেন বা সমকামী সংস্কৃতি-সমকামী প্রবণতাকে প্রত্যক্ষ ভাবে সাহায্য করবেন। যাজকদের এই প্রশিক্ষণই দেওয়া হয়, যাতে তাঁরা স্বেচ্ছায় ব্রহ্মচর্য পালন করতে চান, তাকে জীবনের উপহার বলে মনে করেন।