অট্টালিকার চেয়ে ছোট, ছিমছাম সাজানো গোছানো বাড়িই বেশি পছন্দ আমাদের বেশির ভাগের। পছন্দ অনুযায়ী বদলাচ্ছে বাড়ির ডিজাইনও। এ রকমই এক অন্য ধরনের বাড়ির মালিক ট্রাভেল ভ্লগার ক্রিসচেন এবং সিয়া।
২০১৭ সাল থেকে ক্রিসচেন এবং সিয়া তাঁদের এই ছোট এয়ারস্ট্রিম বাড়িতে রয়েছেন মেয়ে কিয়া এবং পোষ্য অ্যাটলাসকে নিয়ে।
এয়ারস্ট্রিম হল আমেরিকান ভ্রমণ ট্রেলার ব্র্যান্ডের গাড়ি, যা দেখতে গোলাকার এবং মসৃণ অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে তৈরি একটি কোচ।
এই বাড়ি খুঁজতে তাঁদের অনেক কসরত করতে হয়েছিল। শেষমেশ কিজিজিতে ১৯৭৬ সালের এয়ারস্ট্রিম সভিয়ারজিন খুঁজে পান ১০ হাজার মার্কিন ডলার মুল্যে। তাঁরা এটির নাম দেন লুনার।
ই এয়ারস্ট্রিমকে বাড়ির মতো তৈরি করতে ক্রিসচেন এবং সিয়াকে আসবাবপত্র থেকে শুরু করে রান্নাঘর, সব কিছু করতে হয়েছিল নতুন ভাবে।
তাঁরা এই নতুন এয়ারস্ট্রিমকে নিজের হাতে নতুন করে তৈরি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পরে বুঝতে পারেন তাঁদের এয়ারস্ট্রিম সাজাতে সাহায্যের প্রয়োজন হবে।
এই ২০০ বর্গফুটের ঘরে বসবাস করার জন্য প্রয়োজনীয় অনেক কিছুই বাদ দিতে হয়েছে তাঁদের। তৈরি করতে হয়েছে মিনি বাথরুম, বিশেষ মেঝে।।
লুনারকে ঠিক ভাবে চালানোর জন্য এর উপর বসানো হয়েছে সৌর প্যানেল। এর সমস্ত কিছুই চলে সৌরশক্তির মাধ্যমে।
এক বছরের অপেক্ষার পর ২০১৭ সালের ১ জুলাই এই লুনার নতুন ভাবে রাস্তায় চলা শুরু করে। প্রথমে অন্তারিও থেকে ক্যালিফোর্নিয়া পর্যন্ত যাত্রা করেছিল লুনার।
লুনারের ভিতরে ঢুকলে প্রথমে দেখা যাবে ছোট রান্নাঘর, ১০০ বছরের পুরনো কাঠ দিয়ে ফার্ম-হাউস থিমে ডিজাইন করা হয়েছে এটিকে। এতে একটি পিৎজা স্টোন রয়েছে।
লুনারের ছোট ১৫ ফুটের এই বাথরুমটিতে রয়েছে একটি নীল রঙের টাইলস্ বসানো কমপোস্ট টয়লেট। রয়েছে গরম জলের ব্যবস্থাও।
এই ছোট এয়ারস্ট্রিমের মধ্যে দম্পতির সবথেকে প্রিয় তাঁদের বেডরুম। এখানে রয়েছে কিং সাইজ একটি বেড। ৫টি জানলা থাকার জন্য রয়েছে পর্যাপ্ত আলো। রাতের আলোয় জানালা খুললে রয়েছে ক্যাম্পিংয়ের অনুভূতিও।
বসবাস করার জন্য যা প্রয়োজন, সবই রয়েছে বেডরুমে। বেডসাইড টেবিল থেকে শুরু করে জামাকাপড় রাখার জন্য রয়েছে ছ’টি ড্রয়ারও। বেঞ্চ, খাটের তলায় রয়েছে প্রচুর ছোটখাটো জায়গা।
শুধু একটি বেডরুম নয়। রয়েছে অতিথিদের জন্য কিং সাইজ বেডও, তাঁদের চারজন বসার ডাইনিং টেবিলকে পরিবর্তন করলেই হয়েযায় অতিথিদের জন্য কিং সাইজ বেড।
লুনারকে বাসযোগ্য করার পরও কাজ শেষ হয়নি এই দম্পতির। এই গোটা এয়ারস্ট্রিমকে সিয়া এবং ক্রিসচেন তাঁদের ঘুরতে যাওয়ার জায়গা থেকে আনা জিনিস দিয়ে বোহো স্টাইলে সাজিয়েছেন।
এই গোটা এয়ারস্ট্রিমকে বাসযোগ্য করে তোলার জন্য খরচ হয়েছিল ৩৪ হাজার মার্কিন ডলার।
ক্রিসচেন এবং সিয়ার মতে এয়ারস্ট্রিমকে বাসস্থান হিসেবে ভাবার কারণ, তাঁরা চেয়েছিলেন প্রকৃতির সঙ্গে থাকতে এবং নিজের বাড়িকে নিয়ে ঘুরে বেড়াতে।