হর্ষবর্ধন শ্রিংলা ও অজিত ডোভাল।—ফাইল চিত্র।
চিন এবং পাকিস্তানের মতো দুই প্রতিবেশীর সঙ্গে সংঘাতময় সীমান্ত সামলাতে ব্যতিব্যস্ত ভারতের কাছে গত কয়েক মাসে গলার কাঁটা হয়ে উঠেছে নেপালে কে পি শর্মা ওলির সরকারও। পরিস্থিতি সামলাতে দু’দিনের সফরে কাঠমান্ডু গিয়ে আজ দ্বিপাক্ষিক সৌহার্দের পতাকা ওড়ালেন বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। অন্য দিকে সমুদ্রপথে চিনের একাধিপত্য খর্ব করতে রণকৌশলগত বোঝাপড়ার জন্য কলম্বোয় শ্রীলঙ্কা ও মলদ্বীপের সঙ্গে আলোচনা করলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল।
নেপালের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে গত কাল বৈঠকের পরে আজ এক বক্তৃতায় শ্রিংলা বলেন, ‘‘ভারত এবং নেপালের একে অন্যকে প্রয়োজন। একটি যৌথ স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে একসঙ্গে পথ চলাটাই কাম্য। গোটা দক্ষিণ এশিয়ার জন্যই দু’দেশের বন্ধুত্ব মূল্যবান।’’
ভারতীয় ভূখণ্ডের কালাপানি, লিপুলেখ এবং লিম্পিয়াধুরাকে নেপালের মানচিত্রে ‘জুড়ে’ নেপালের পার্লামেন্টে বিল পাশ করিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ওলি। তার জেরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে ছায়া ঘনিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, নেপালের ঘরোয়া রাজনৈতিক শিবিরও বিষয়টি নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত। ওলি চিনের হাতে অতিরিক্ত তামাক খাচ্ছেন বলে মনে করে নেপালি কংগ্রেস এবং কমিউনিস্ট পার্টির একটা বড় অংশ। পাশাপাশি চিনও যে নেপালের ভূখণ্ড অন্যায্য ভাবে দখল করেছে, সেই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরে নেপালে ওলির বিরুদ্ধ শিবির আরও সক্রিয় হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নেপালকে সঙ্গে রাখা দিল্লির অগ্রাধিকারের মধ্যে পড়ছে। নেপালের প্রধানমন্ত্রীর বিদেশনীতি সংক্রান্ত পরামর্শদাতা রাজন ভট্টরাই ভারতীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকের পরে আজ ইতিবাচক বার্তা দিয়েই বলেছেন, “আমাদের দেশ কখনওই তার ভূখণ্ডকে ভারতের স্বার্থের বিরোধী কোনও কাজে ব্যবহার করতে দেবে না। তবে আমাদেরও কিছু বিষয় রয়েছে। সেগুলির সন্তোষজনক সমাধান হোক, এটাই চাই।’’
নেপালকে কূটনৈতিক ভাবে কাছে টানতে যখন সক্রিয় শ্রিংলা, তখনই ভারত মহাসাগরে নিরাপত্তা সমন্বয় নিয়ে শ্রীলঙ্কা ও মলদ্বীপের সঙ্গে আলোচনা করেছেন অজিত ডোভাল। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের মতে, সমুদ্রপথে সহযোগিতার ক্ষেত্রে কেবল আমেরিকা-নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দিল্লি। তাই বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাণিজ্যিক ও কৌশলগত সমন্বয় নিয়ে আলোচনা করছে সাউথ ব্লক।