হ্যামেটসচওয়ান্ড লিফ্ট। ইউরোপের সবচেয়ে উঁচু এলিভেটর। মেঘ ভেদ করে যাত্রীদের পৌঁছে দেয় আল্পসের কোলে।
১১৭ বছরের পুরনো এই লিফ্ট আজও এক বিস্ময়। পর্বতের পাদদেশ থেকে মিনিটের মধ্যেই পৌঁছে দিত ১৫৩ মিটার উঁচুতে অবস্থিত হ্যামেটসচওয়ান্ড ভিউ পয়েন্টে। অপূর্ব প্রাকৃতিক দৃশ্যে মন ভরে উঠত।
জোসেফ বুচার নামে এক সুইস ব্যবসায়ী ১৯০৫ সালে প্রথম এই এলিভেটরটি বানিয়েছিলেন।
তখন এলিভেটরের গতিবেগ ছিল প্রতি সেকেন্ডে এক মিটার। হ্যামেটসচওয়ান্ড সামিটে যাত্রীদের পৌঁছে দিতে সময় নিত তিন মিনিট।
হ্যামেটসচওয়ান্ড সামিটের উচ্চতা ছিল ৫০২ ফুট। কাঠের পাটাতন দিয়ে তৈরি সেই এলিভেটর সর্বাধিক আট জনকে একসঙ্গে বহন করতে পারত।
পরবর্তীকালে স্কিন্ডলার গ্রুপ নামে একটি সুইস সংস্থা এই এলিভেটরের দেখভালের দায়িত্ব নেয়। প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে এলিভেটরেরও আমূল বদল ঘটে।
১৯৩৫ সালে এলিভেটরের গতি আরও বাড়ানো হয়। সেকেন্ডে ২.৭ মিটার উচ্চতা অতিক্রম করে ফেলতে পারত এটি। কাঠের পাটাতনের বদলে শুরু হয় ধাতুর ব্যবহার। সে সময় বিশ্বের সর্বোচ্চ গতিসম্পন্ন এলিভেটর হয়ে উঠেছিল এটি।
গতিবেগ বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এলিভেটরের উচ্চতাও অনেকটাই বাড়ানো হয়েছে পরবর্তীকালে। হ্যামেটসচওয়ান্ড সামিটের উচ্চতা এখন সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এক হাজার ১৩২ মিটার। কয়েক মিনিটের মধ্যেই যাত্রীদের এই উচ্চতায় পৌঁছে দেয় এলিভেটরটি।
এই এলিভেটর পর্যটকদের কাছে তাই আজও অত্যন্ত আকর্ষণের। সামিটের উপরে ছোট কাচের সেতু করা রয়েছে। এলিভেটর থেকে নেমে সেই সেতু দিয়ে হেঁটে ঘুরে আশেপাশের দৃশ্য উপভোগ করা হয়।
নীচে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম হ্রদ লুসিরনি আর চোখ তুলে তাকালেই হাতের মুঠোয় যেন ধরা দিতে তৈরি বরফাবৃত আল্পস।