টিভি স্টুডিয়োয় অ্যাঙ্কর-সহ সবাইকে পিছমোড়া করে শুইয়ে রাখা হয়েছে। ছবি— রয়টার্স।
সরকারি টিভি চ্যানেলে চলছিল অনুষ্ঠান। আচমকাই হুডি মাথায় হাতে বন্দুক, ডিনামাইট, গ্রেনেড নিয়ে হুড়মুড় করে ঢুকে পড়ল কয়েক জন। সঙ্গে সঙ্গে চ্যানেল উড়িয়ে দেওয়ার, খুন করার হুমকি। অনুষ্ঠান লাটে উঠল। অ্যাঙ্কর-সহ অতিথিদের মেঝেতে হামাগুড়ি দিতে বাধ্য করা হল। এর পরেই চ্যানেলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। দক্ষিণ আমেরিকার ছোট দেশ ইকুয়েডরের ভয়াবহ অবস্থা। টিভি চ্যানেলে দুষ্কৃতী তাণ্ডব তারই একটি উদাহরণ।
গত সোমবার থেকে লাতিন আমেরিকার ওই দেশে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছে। আপাতত তার মেয়াদ ৬০ দিন। সে দেশের কুখ্যাত অপরাধী জেল ভেঙে পালানোর পরেই প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল নোবোয়া দেশে জরুরি অবস্থা জারি করেন। তার পরেই ঘটে গেল এই ঘটনা। এর পাশাপাশি একাধিক পুলিশকর্তাকে অপহরণ করেছে দুষ্কৃতীরা। পর পর বিস্ফোরণের আওয়াজও শোনা যাচ্ছে।
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সরকারি টেলিভিশন টিসিতে অনুষ্ঠান চলছিল। সেই সময় কালো হুডি পরিহিত কয়েক জন সশস্ত্র দুষ্কৃতী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে গুয়াইয়াক্যুইল শহরে চ্যানেলের স্টুডিয়োয় ঢুকে পড়ে। চ্যানেলটিকে ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। সেই সময় চ্যানেলের লাইভ সম্প্রসারণ জারি ছিল। তাতে বেশ কিছু গুলি চলার মতো আওয়াজও পাওয়া যায়। কিন্তু স্টুডিয়োয় গুলি চলেছে কি না তা জানা যায়নি।
পুলিশ জানিয়েছে, টিভি চ্যানেলে হামলার ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। পুলিশ ১৩ জন দুষ্কৃতীকেই গ্রেফতার করে ফেলেছে বলেও দাবি করা হয়েছে। কিন্তু কী কারণে টিভি চ্যানেলে হামলা তা এখনও পরিষ্কার নয়।
গত বছর নভেম্বরে ক্ষমতায় আসেন নোবোয়া। তিনি ইকুয়েডরের ধনীতম ব্যক্তির সন্তান। ক্ষমতায় এসেই তিনি দেশে মাদক ব্যবসা এবং সেই সম্পর্কিত হিংসার ঘটনা চিরতরে বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দেন। মনে করা হচ্ছে, সে দেশের কুখ্যাত মাদক কারবারী ‘গ্যাং’ লোস চোনেরোসের প্রধান আডোলফো মাসিয়াসের জেলে থেকে পালানোর ঘটনার পরেই তিনি এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। আবার নোবোয়ার জরুরি অবস্থা জারির সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে দেশ জুড়ে হিংসার ঘটনার বাড়বাড়ন্ত বলে মনে করা হচ্ছে।