শনিবার গভীর রাতে তুরস্ক সীমান্তে আটক আফগান শরণার্থীরা। রয়টার্স
২০১৫ সালের অভিজ্ঞতা মোটেই সুখের ছিল না। রাষ্ট্রপুঞ্জের পরিসংখ্যান বলছে, সেই সালটায় যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া থেকে কমপক্ষে ৯ লক্ষ শরণার্থী ঢুকেছিলেন ইউরোপের বিভিন্ন শহরে। ছোট ছোট নৌকায় সমুদ্র পেরোতে গিয়ে ডুবে বা অন্য কোনও দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল অন্তত সাড়ে তিন হাজার মানুষের। গত সপ্তাহে আফগানিস্তানে আশরফ গনি সরকারের পতনের পরেই তাই এ বার আগে ভাগেই সতর্ক এই মহাদেশের অধিকাংশ দেশ। তালিবান নেতৃত্বের হাত থেকে বাঁচতে শয়ে শয়ে মরিয়া আফগান নাগরিকের দেশ ছাড়ার হিড়িকের ছবি দেখে ফেলেছে গোটা বিশ্ব। আফগান শরণার্থীদের আটকাতে তুরস্ক
সীমান্তে ইতিমধ্যেই ৪০ কিলোমিটার লম্বা প্রাচীর তুলে ফেলেছে গ্রিস।
গ্রিস সরকারের ধারণা, তুরস্ক হয়ে প্রচুর মানুষ আফগানিস্তান থেকে তাদের দেশে ঢোকার চেষ্টা করবেন। দেশের নাগরিক অধিকাররক্ষা সংক্রান্ত মন্ত্রকের তরফে গত কাল জানানো হয়েছে, অদূর ভবিষ্যতে যা হতে চলেছে, তার জন্য হাত পা গুটিয়ে বসে থাকতে তারা মোটেই রাজি নয়। তাই এখন থেকেই সীমান্তে কড়া নজরদারি শুরু হয়েছে। তোলা হয়ে গিয়েছে প্রাচীরও।
তবে গ্রিস আফগান শরণার্থী আটকাতে কঠোর ব্যবস্থা নিলেও ইউরোপের বাকি কয়েকটি দেশ আর আমেরিকা তাঁদের সম্পর্কে নিজেদের অবস্থান আগে ভাগেই স্পষ্ট করে দিয়েছে। পরিস্থিতি আঁচ করে চলতি মাসের গোড়াতেই আমেরিকার বিদেশ দফতর আফগান শরণার্থীদের জন্য পি-টু (প্রায়রিটি টু) নীতি ঘোষণা করেছিল। সেই ঘোষণা অনুযায়ী, আফগানিস্তান থেকে মোট ১০ হাজার শরণার্থী আমেরিকায় থাকার অনুমতি পেতে পারেন। যাঁরা এত বছর আমেরিকান বাহিনীকে সে দেশে নানা ভাবে সাহায্য করেছেন, জো বাইডেন প্রশাসন আপাতত তাঁদেরই অগ্রাধিকার দিচ্ছে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো আশ্বাস দিয়েছেন, তাঁরা আপাতত ২০ হাজার করে আফগান শরণার্থীকে নিজেদের দেশে আশ্রয় দিতে প্রস্তুত। ব্রিটেনের বরিস জনসন সরকারও জানিয়েছে, তারা পাঁচ হাজার আফগান শরণার্থীকে আশ্রয় দেবে।
চলতি বছরের প্রথমার্ধেই সাত হাজার আফগান শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে গ্রিস, জার্মানি, ফ্রান্স, ইটালির মতো ইউরোপের কিছু দেশ। গ্রিস এখন প্রাচীর তুললেও ফ্রান্স, অস্ট্রিয়া, সুইডেনের মতো দেশগুলি কিছু সংখ্যক আফগান নাগরিককে আশ্রয় দিতে প্রস্তুত বলে জানা গিয়েছে।