অরবিন্দ কেজরীওয়াল (মাঝখানে)। ছবি: পিটিআই।
হরিয়ানার বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে যমুনার জলে বিষ মেশানোর অভিযোগ প্রসঙ্গে পাওয়া নোটিসের জবাব দিতে নির্বাচন কমিশনের দফতরে গেলেন আদমি পার্টি (আপ)-র প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল। কমিশনের নির্দেশ মেনে শুক্রবার দুপুরে নির্বাচন সদনে হাজির হন দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন আপের দুই মুখ্যমন্ত্রী— দিল্লির আতিশী মার্লেনা এবং পঞ্জাবের ভাগবন্ত মান।
কমিশনের দফতর থেকে বেরিয়ে কেজরী বলেন, ‘‘দিল্লির ভোটে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করছে হরিয়ানা সরকার।’’ সেই সঙ্গে কমিশনের উদ্দেশে তাঁর খোঁচা— ‘‘দেখা যাচ্ছে অভিযুক্তকে কোনও প্রশ্ন না করে অভিযোগকারীকেই নিশানা করা হচ্ছে।’’ এর আগে বুধবার নোটিসের জবাবে কেজরী যা বলেছিলেন তাতে খুশি হয়নি কমিশন। শুক্রবার বেলা ১১টার মধ্যে তাঁকে ছ’টি সুনির্দিষ্ট প্রশ্নের জবাব পাঠাতে বলা হয়েছিল কমিশনের তরফে। প্রসঙ্গত, গত সোমবার হরিয়ানার বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে যমুনার জলে বিষ মেশানোর অভিযোগ এনেছিলেন কেজরীওয়াল।
এর পরে একই অভিযোগ তুলেছিলেন আতিশীও। তাঁরা জানিয়েছিলেন, হরিয়ানার অন্তর্ঘাতের ফলেই দিল্লিতে পানীয় জল সরবরাহ বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। বিজেপির অভিযোগের প্রেক্ষিতে কমিশন কেজরীর কাছে জানতে চেয়েছে কোন সূত্রে তিনি এ ‘খবর’ পেয়েছেন। কত পরিমাণ, কী ধরনের বিষ হরিয়ানা সরকার যমুনার জলে মিশিয়েছে, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে। সেই সঙ্গে আপ প্রধানকে প্রশ্ন করা হয়েছে, দিল্লিবাসীকে বিষের প্রকোপ থেকে বাঁচাতে তাঁর দলের সরকার কী পদক্ষেপ করেছে।
প্রসঙ্গত, কমিশনের প্রথম নোটিসের ভিত্তিতে দেওয়া ১৪ পাতার জবাবেই কার্যত সুর নরম করে কেজরীওয়াল জানিয়েছিলেন, বিজেপি শাসিত হরিয়ানা থেকে আসা অপরিশোধিত জল ‘মারাত্মক বিষাক্ত ও দূষণ’ ছড়াচ্ছে। সেই দূষণ মূলত অ্যামোনিয়াঘটিত বলেও জানিয়েছিলেন আপ প্রধান। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে এক দফায় বিধানসভার ৭০টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে। ৮ ফেব্রুয়ারি হবে গণনা। সেখানে প্রতিটি আসনে মুখোমুখি লড়ছে আপ, বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ এবং কংগ্রেস।
দিল্লির ভোটে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কেজরী প্রার্থী হয়েছেন তাঁর বর্তমান আসন নয়াদিল্লিতেই। কমিশনের নোটিস পাওয়ার পরেও বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করে হরিয়ানা থেকে আসা যমুনার জলের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন কেজরী। পাশাপাশি এই সাংবাদিক বৈঠকে কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের অভিযোগও আনেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হতে পারে বলে কমিশনের একটি সূত্র মনে করছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বৃহস্পতিবার দাবি করেন, কেজরী দিল্লির বিধানসভা ভোটের আগে মিথ্যা অভিযোগ তুলে বাজার গরম করার চেষ্টা করছেন। সেই সঙ্গে জলের বিষের তত্ত্ব উড়িয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি নিয়মিত যমুনার জল পান করি।’’ তার পরে কেজরী পাল্টা বলেছিলেন, ‘‘মোদী এবং অমিত শাহ প্রকাশ্যে যমুনার জল খেয়ে দেখান।’’