গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
গালওয়ান উপত্যকায় গত জুনে চিনা ও ভারতীয় জওয়ানদের সংঘর্ষের ঘটনাকে ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ও ইতিহাসের একটা সংক্ষিপ্ত অধ্যায়’ বলে মনে করেন ভারতে চিনা রাষ্ট্রদূত সুন ওয়েইডং। তাঁর কথায়, ‘‘কিছু দিন আগে সীমান্তে এমন একটা দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটেছিল যা চিন বা ভারত কেউই চায়নি। এখন আমরা এটা মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছি। ইতিহাসের নিরিখে এটা একটা সংক্ষিপ্ত অধ্যায় ছাড়া কিছুই নয়।’’
গত জুনে গালওয়ান উপত্যকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ঢুকে পড়া চিনা সেনাদের সঙ্গে ভারতীয় জওয়ানদের সংঘর্ষে সেনাবাহিনীর বিহার রেজিমেন্টের এক কম্যান্ডিং অফিসার-সহ ২০ জন ভারতীয় জওয়ান প্রাণ হারান।
দিল্লিতে চিন-ভারত যুব ফোরামের একটি অনুষ্ঠানে চিনা রাষ্ট্রদূত ওয়েইডং বলেন, ‘‘এই একুশ শতকে প্রতিবেশী দু’টি দেশের সম্পর্ক কখনও পিছনের দিকে হাঁটতে পারে না। বরং তা আগামী দিনে উত্তরোত্তর আরও মজবুত হয়ে উঠবে।’’
ওয়েইডং-এর বক্তব্য, ভারত ও চিন, দু’টি দেশই এখন উদীয়মান। এই পরিস্থিতিতে পুরনো দিনের মতাদর্শগত বিভেদ থেকে সরে আসা উচিত দু’টি দেশেরই। ‘এক জনের লাভ মানে আর এক জনের ক্ষতি’ অথবা ‘কারও লাভ কারও ক্ষতি নেই’ এমন ধ্যানধারণা থেকে দু’টি দেশেরই দ্রুত বেরিয়ে আসার সময় এসে গিয়েছে। নিজের স্বার্থটুকু ছাড়িয়ে গিয়ে দু’টি দেশের আরও কাছাকাছি আসার সময় এসে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনা-আতঙ্কে কমেছে খরচ, থমকে বৃদ্ধির হার
আরও পড়ুন: টিকা নিয়ে কথা ভারত-রাশিয়ার
ওয়েইডং-এর কথায়, ‘‘এ সব ভুলে গেলে আস্তাকুঁড়ে চলে যেতে হবে। ভুল পথ ধরে হাঁটতে হবে। প্রতিবেশী এই দু’টি দেশের মধ্যে এখন বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতাটাই বেশি জরুরি। সেটাই স্বাভাবিকতা হয়ে ওঠা উচিত। এই লক্ষ্য থাকলে আর যুক্তি দিয়ে সব কিছু বিচার করা হলে দু’দেশের মধ্যে সব সমস্যাই মিটে যাবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, দু’টি দেশের দু’টি প্রাচীন সভ্যতাই এটা চাইছে। আর সেটা বাস্তবায়িত করার ব্যাপারে দু’টি দেশই সক্ষম। তাই আমাদের যথেষ্টই বিশ্বাস রয়েছে, আগামী দিনে ভারত ও চিনের সম্পর্ক আরও মজবুত হয়ে উঠবে।’’
অতিমারি আর গালওয়ান উপত্যকার উত্তেজেনায় দু’দেশের সম্পর্কে কিছুটা চিড় ধরেছে, এ কথা কবুল করেও দিল্লিতে চিনা রাষ্ট্রদূত বলেছেন, ‘‘একটা পুরনো চিনা প্রবাদ রয়েছে ‘সমস্যার চেয়েও সমাধানের রাস্তা অনেক বেশি’। ভারত ও চিনের নাগরিকদের ২ হাজার বছরের সম্পর্ক সেই অতিমারি আর গালওয়ান উপত্যকার সাম্প্রতিক উত্তেজনায় নষ্ট হয়ে যেতে পারে না।’’
আর সেই সম্পর্ককে আরও মজবুত করে তোলার জন্য যে দু’টি দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও ‘একে অন্যের উপর নির্ভরশীল’ ও ‘একে অন্যের সঙ্গে সম্পর্কিত’ করে তুলতে হবে, ভারত-চিন যুব ফোরামের ওয়েবিনারে তার উপরেও গুরুত্ব আরোপ করেন ভারতে চিনা রাষ্ট্রদূত।