প্রতীকী ছবি।
বিশ্ব উষ্ণায়নের মাত্রা কমিয়ে দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ করাই লক্ষ্য। এই লক্ষ্যপূরণে রবিবার রোমে জি-২০ সম্মেলনে ওই গোষ্ঠীভুক্ত রাষ্ট্রনেতারা দায়বদ্ধ থাকার কথা জানিয়েছেন। বিশ্ব জুড়ে উষ্ণায়ন কমিয়ে আনার জন্য এই মর্মে একটি খসড়াও তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা এএফপি। যদিও এই লক্ষ্যমাত্রায় দূরদর্শিতার অভাব রয়েছে বলে মনে করছেন বহু পরিবেশবিদ।
জি-২০ রাষ্ট্রনেতাদের এই শপথের খসড়া আগামী রবিবার চূড়ান্ত ভাবে প্রকাশ্যে আসতে পারে বলে সূত্রের খবর। তবে ওই খসড়ায় বলা হয়েছে, বিশ্ব জুড়ে উষ্ণায়নের মাত্রা দেড়় ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখার জন্য সমস্ত দেশগুলিকেই অর্থপূর্ণ এবং কার্যকর পদক্ষেপ করতে হবে। খসড়ার বিবৃতি অনুযায়ী, আমেরিকা, চিন, ভারত, রাশিয়া-সহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলি বিশ্ব উষ্ণায়নের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে স্বল্প, মাঝারি এবং দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য রাখার কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন। এ কাজে আন্তর্জাতিক স্তরে সহযোগিতাও জরুরি বলে মনে করছেন জি-২০ গোষ্ঠীর রাষ্ট্রনেতারা।
পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্ব উষ্ণায়ন দেড় ডিগ্রিতে সীমাবদ্ধ রাখার লক্ষ্যপূরণের অর্থ হল, ২০৩০ সালের মধ্যে গোটা বিশ্বের গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন কমিয়ে প্রায় অর্ধেক করে ফেলতে হবে। পাশাপাশি, ২০৫০ সালের তা ‘নেট জিরো’-তে নামিয়ে আনতে হবে।
এই খসড়া নিয়ে কূটনীতিকরা যথেষ্ট আশাবাদী। তাঁদের মতে, খসড়ায় ২০১৫-র প্যারিস জলবায়ু চুক্তির থেকেও কড়া পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে। যদিও তা মনে করেন না পরিবেশকর্মীদের একাংশ। তাঁদের মতে, এই খসড়ার বিবৃতি অত্যন্ত দুর্বল ও দায়সারা ভাবে তৈরি করা। পরিবেশ নিয়ে আন্দোলন করা সংস্থা গ্রিনপিস এই খসড়াকে দুর্বল বলার পাশাপাশি ‘উচ্চাকাঙ্ক্ষাহীন এবং অদূরদর্শী’ বলেও তোপ দেগেছে। তাদের মতে, পরিবেশ নিয়ে সময়োযোগী পদক্ষেপ করতে ব্যর্থ জি-২০।
প্রসঙ্গত, বিশ্বের মোট গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমনের ৮০ শতাংশের জন্য দায়ী পাঁচটি দেশ। তাদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে চিন। চিনের পরেই রয়েছে আমেরিকা, ভারত, ব্রাজিল এবং জার্মানি। এই পাঁচ দেশই জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত। জি-২০ সম্মেলনের পরেই স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোয় শুরু হবে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের সম্মেলন (সিওপি২৬)। গ্রিনপিস-এর এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টর জেনিফার মর্গ্যানের মন্তব্য, ‘‘জি-২০ সম্মেলনের যদি সিওপি২৬-র ড্রেস রিহার্সাল বলে ধরা হয়, তবে বিশ্বনেতারা (লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে) সব কিছুই তালগোল পাকিয়ে ফেলেছেন।’’ দারিদ্র দূরীকরণ নিয়ে লড়াই করা সংস্থা গ্লোবাল সিটিজেন-এর শীর্ষ ডিরেক্টর ফ্রেডরিক রোডারের মতে, ‘‘ডি-২০ সম্মেলেন কোনও কার্যকরী পদক্ষেপ করা হয়নি। তার বদলে এই সম্মেলনে কিছু দায়সারা সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে এসেছে।’’