ক্রিস্টির বলা ক্লু শুনে সমাধান করুন রহস্যের

এক হাজার বছরের পুরনো প্রাসাদোপম ‘পোর্ট এলিয়ট এস্টেট’-এর একটি বিশাল ঘর খুলে দেওয়া হয়েছে এই প্রদর্শনীর জন্য। প্রদর্শনীর সব থেকে চমকপ্রদ প্রাপ্তি— স্বয়ং লেখিকার কণ্ঠে উপন্যাসের প্রথম দৃশ্যের পাঠ।

Advertisement

শ্রাবণী বসু

লন্ডন শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৭ ১৩:১০
Share:

প্রদর্শনী: এ ভাবেই সাজানো হবে ঘর।

আগাথা ক্রিস্টির ভক্তদের জন্য সুখবর। প্রিয় লেখিকার গলায় তাঁর অন্যতম জনপ্রিয় গোয়েন্দা গল্প শুনতে পাবেন তাঁরা। সৌজন্যে, ‘আগাথা ক্রিস্টি লিমিটেড’ এবং ডিজিট্যাল শিল্পী স্কট ফ্লেচারের যৌথ উদ্যোগে এক অভিনব প্রদর্শনী।

Advertisement

২৭ জুলাই শুরু হচ্ছে কর্নওয়ালের ‘পোর্ট এলিয়ট উৎসব’। প্রতি বছরের মতো এ বারেও সেখানে থাকছে নাটক-নাচ-গান, ফ্যাশন শো, লেখক ও শিল্পীদের নিয়ে নানা অনুষ্ঠান। সেখানেই এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে গোয়েন্দা গল্পের প্রবাদপ্রতিম ব্রিটিশ লেখিকা আগাথা ক্রিস্টিকে নিয়ে। তাঁর লেখা একটি উপন্যাস— ‘এলিফ্যান্ট্‌স ক্যান রিমেমবার’-এর বিশেষ ডিজিট্যাল প্রদর্শনী এ বারের উৎসবে অন্যতম মুখ্য আকর্ষণ।

এক হাজার বছরের পুরনো প্রাসাদোপম ‘পোর্ট এলিয়ট এস্টেট’-এর একটি বিশাল ঘর খুলে দেওয়া হয়েছে এই প্রদর্শনীর জন্য। প্রদর্শনীর সব থেকে চমকপ্রদ প্রাপ্তি— স্বয়ং লেখিকার কণ্ঠে উপন্যাসের প্রথম দৃশ্যের পাঠ। ১৯৭২ সালে প্রকাশিত উপন্যাসটির প্রথম অংশ ক্রিস্টিকে দিয়ে পাঠ করিয়ে রেকর্ড করে রাখা হয়েছিল সেই সাতের দশকের প্রথম দিকেই। কিন্তু এত দিন সেটি প্রকাশিত হয়নি। ১৯৭৬ সালে মারা যান লেখিকা। প্রায় সাড়ে চার দশক পরে জনসমক্ষে আনা হচ্ছে ছ’ঘণ্টার সেই রেকর্ড।

Advertisement

‘হোলোলেন্স’ প্রযুক্তির সাহায্যে এই ডিজিট্যাল প্রদর্শনী তৈরি করা হয়েছে। দর্শকদের এক বিশেষ ধরনের চশমা পরতে হবে, যার সাহায্যে কম্পিউটার-নির্মিত থ্রি-ডি ছবি ফুটে উঠবে চারপাশে। ডিজিট্যাল প্রযুক্তির সাহায্যেই ছড়ানো থাকবে নানা ‘ক্লু’, যা খুঁজে বার করে রহস্যের সমাধান করতে পারবেন দর্শকরা, ঠিক গল্পের গোয়েন্দা এ্যরকুল পোয়ারোর মতোই!

স্রষ্টা আর সৃষ্টির এই অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন যে ডিজিট্যাল শিল্পী, সেই স্কট ফ্লেচার এক ব্রিটিশ সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘আগাথা ক্রিস্টির লেখনি এমনিতেই খুব দৃষ্টিনন্দন। চোখ বন্ধ করে যদি তাঁর উপন্যাসের পাঠ শোনা যায়, চোখের সামনে দৃশ্যগুলো ভেসে উঠবে। আর লেখিকা স্বয়ং পাঠ করছেন— এটা তো একটা আলাদা মাত্রা যোগ করবেই!’’ ফ্লেচারের মতে, ‘‘সহস্র বছরের প্রাচীন বাড়ি, মৃত্যুর ও-পার থেকে ভেসে আসা লেখিকার কণ্ঠস্বর, কম্পিউটারে নির্মিত থ্রি-ডি ছবি ও জুতসই আবহসঙ্গীত— সব মিলিয়ে এমন এক পরিবেশ তৈরি হবে, যা এক লহমায় ক্রিস্টি-অনুরাগীদের নিয়ে যাবে অন্য এক দুনিয়ায়।

আগাথা ক্রিস্টির লেখা ও তাঁর রচনা অবলম্বনে তৈরি হওয়া সিনেমা বা নাটকের স্বত্ব যে ‘আগাথা ক্রিস্টি লিমিটেড’-এর হাতে, সেই সংস্থার প্রধান, জেমস প্রিচার্ড একুশ শতকের পাঠক-দর্শকের কাছে নতুন করে ক্রিস্টিকে পৌঁছে দিতে চান। জানালেন, ক্রিস্টির সব থেকে জনপ্রিয় উপন্যাস ‘মার্ডার অন দ্য ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস’ অবলম্বনে বানানো হচ্ছে নতুন ছবি। তা ছাড়া, এ বছরের শেষেই লন্ডনের মঞ্চে মুক্তি পাবে নতুন নাটক ‘উইটনেস ফর দ্য প্রসিকিউশন’। আগাথা ক্রিস্টির মেয়ের নাতি এই জেমস প্রিচার্ড।

‘‘এ যুগের ডিজিট্যাল প্রযুক্তির সাহায্যে তাঁর উপন্যাসের এই নতুন প্রদর্শনী ওঁর নিজেরও খুব পছন্দ হতো,’’ বাবার দিদিমা সম্পর্কে মন্তব্য প্রিচার্ডের। ‘‘খুব উদারমনস্ক ছিলেন তো, নতুনকে গ্রহণ করার অসম্ভব ক্ষমতা ছিল ওঁর।’’

প্রত্যাশা মতোই, প্রদর্শনীর সব টিকিট অনেক দিন আগেই বিক্রি হয়ে গিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement