আমেরিকান সেনাবাহিনীর ফেলে যাওয়া খাবার বিক্রি হচ্ছে কাবুলের রাস্তায়। বুধবার। ছবি রয়টার্স।
রাশিয়া, ইরান-সহ মধ্য এশিয়ার পাঁচ দেশের সঙ্গে কাবুল পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করে দিল্লি ঘোষণাপত্র প্রকাশ করেছিল ভারত। এর পর বুধবার ফ্রান্সের সঙ্গে সন্ত্রাস বিষয়ক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পরেও যৌথ বিবৃতি প্রকাশিত হল। সেখানে আফগানিস্তান নিয়ে ভারতের উদ্বেগের পাশেই রইল ফ্রান্স।
ভারত-ফ্রান্স যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের (সন্ত্রাস বিষয়ক) বৈঠকটি বুধবার হল প্যারিসে। ভারতের প্রতিনিধিত্ব করলেন বিদেশ মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব (সন্ত্রাস মোকাবিলা) মহাবীর সিঙ্ঘভি, ফ্রান্সের তরফে ছিলেন সে দেশের বিদেশ মন্ত্রকের নিরাপত্তা বিষয়ক ডিরেক্টর ফিলিপ্পে বেখতু।
সূত্রের খবর, আলোচনায় আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির প্রসঙ্গটি বিশদে উঠে আসে। দিল্লি নিজের উদ্বেগ প্রকাশ করে স্পষ্টই জানায়, কাবুলে তালিবান সরকার গড়ার পর সে দেশে পাকিস্তানের মদতপ্রাপ্ত জঙ্গি সংগঠনগুলির সক্রিয়তা বাড়ছে। হক্কানি নেটওয়র্ক তার নিশানা করছে কাশ্মীরকে। বিষয়টি নিয়ে শুধুমাত্র সহমতই হননি ফরাসি কর্তা, পাকিস্তানের নাম না করে এই আশঙ্কাকে জায়গা দেওয়া হয়েছে যৌথ বিবৃতিতেও। বলা হয়েছে, ‘দু’টি দেশ তাদের নিজেদের ভূখণ্ডে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা নিয়ে পর্যালোচনা করেছে। সেই সঙ্গে আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলার সময় জানিয়েছে, আফগানিস্তানের ভূখণ্ড যেন মৌলবাদ ও সন্ত্রাসবাদের উৎস না হয়ে ওঠে, তা নিশ্চিত করতে হবে। অন্য কোনও দেশকে আক্রমণ করতে উদ্যত জঙ্গিদের আশ্রয়স্থল, প্রশিক্ষণ এবং নিয়োগকেন্দ্র যাতে আফগানিস্তান না হয়, সন্ত্রাসবাদীদের পুঁজি জোগানের ক্ষেত্রও যেন তারা হয়ে না ওঠে, সে দিকে কড়া নজর রাখতে হবে।’
পাকিস্তানে তালিবানদের সঙ্গে যে সব জঙ্গি সংগঠনের যোগসাজশের অভিযোগ তোলা হচ্ছে, সেগুলির নামও ভারত-ফ্রান্স বিবৃতিতে রয়েছে। আল কায়দা, আইএসআইএস-এর পাশাপাশি লস্কর-ই-তইবা, জইশ-ই-মহম্মদ এবং হিজবুল মুজাহিদিনের নেটওয়র্ক যাতে আর বাড়তে না পারে, সে জন্য যৌথ উদ্যোগের কথা বলেছেন দু’দেশের কর্তারা। মৌলবাদ, মাদক চোরাচালান, চরমপন্থী হিংসা, জঙ্গিদের টাকা জোগানো, সন্ত্রাস ছড়ানোর কাজে নেটপ্রযুক্তির ব্যবহার রুখতে ভারত এবং ফ্রান্স সহযোগিতা বাড়াবে বলে স্থির হয়েছে বৈঠকে।