পাক স্টক এক্সচেঞ্জে হামলা। এলাকা ঘিরে ফেলেছে নিরাপত্তা কর্মীরা। ছবি: এএফপি।
পাকিস্তান স্টক এক্সচেঞ্জে জঙ্গি হামলায় নিহত হলেন ৬ জন। সোমবার সকালে হামলা চালায় চার সশস্ত্র জঙ্গি। এই হামলায় নিহত হয়েছেন চার নিরাপত্তারক্ষী, এক পুলিশ অফিসার এবং এক জন সাধারণ নাগরিক। খবর পেয়েই জঙ্গিদের মোকাবিলা করতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ এবং সিন্ধ রেঞ্জার্স। তাদের পাল্টা গুলিতে নিহত হয় চার জঙ্গি। প্রথম দিকে কোনও জঙ্গি গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার না করলেও, পরে বালোচ লিবারেশন আর্মি এই হামলার দায় নিয়েছে বলে জানিয়েছেন সিন্ধ রেঞ্জার্স-এর ডিরেক্টর জেনারেল আহমেদ বুখারি।
সোমবার স্থানীয় সময় তখন সকাল ১০টা। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, একটা সেডান গাড়ি করাচির স্টক এক্সচেঞ্জের সামনে এসে দাঁড়ায়। দিনের ব্যস্ত সময়। চার দিকে তখন ভিড়। সকলের নজর এড়িয়েই পিঠে ব্যাকপ্যাক এবং হাতে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র নিয়ে ঝটপট কয়েক জন নেমে পড়ে ওই গাড়ি থেকে। সটান ঢুকে পড়ে স্টক এক্সচেঞ্জ চত্বরে।
জঙ্গি হামলা হতে চলেছে সেটা প্রথমে কেউই বুঝে উঠতে পারেননি। ওই প্রত্যক্ষদর্শী আরও জানান, হঠাত্ই গ্রেনেড বিস্ফোরণের আওয়াজ ভেসে আসে এক্সচেঞ্জ চত্বর থেকে। তার পরই মুহুর্মুহু গুলি চলতে থাকে। তত ক্ষণে চার পাশে জঙ্গি হামলার খবর ছড়িয়ে পড়েছে। আতঙ্কে দৌড়াদৌড়ি শুরু হয়ে যায়। কিন্তু তার মধ্যে জঙ্গিদের গুলিতে নিহত হন ৬ জন। আহত হন বেশ কয়েক জন। তাঁদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, জঙ্গিদের কাছ থেকে প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র এবং খাবার উদ্ধার হয়েছে। জঙ্গিদের সঙ্গে যে সব সরঞ্জাম উদ্ধার হয়েছে, তাতে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের ধারণা পণবন্দি বানানোর পরিকল্পনা নিয়েই জঙ্গিরা এসেছিল। কিন্তু পুলিশ এবং রেঞ্জার্স-এর যৌথবাহিনী সেই পরিকল্পনা ভেস্তে দেয়। সব জঙ্গিকেই খতম করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে।
এই হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। সেই সঙ্গে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। ইমরান বলেন, “যে ভাবে আমাদের পুলিশ এবং নিরাপত্তারক্ষীরা নিজেজের জীবন বিপন্ন করে এই হামলার মোকাবিলা করেছেন তার জন্য গর্বিত।” অন্য দিকে, জঙ্গি হামলার পরেও স্টক এক্সচেঞ্জের কাজ থমকে যায়নি বলে জানিয়েছেন পাকিস্তান স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান সুলেইমান এস মেহদি। তিনি বলেন, “কোনও সন্দেহ নেই যে এটা জঙ্গি হামলা। কিন্তু আমাদের নিরাপত্তারক্ষীরা যে ভাবে নিজের জীবন উত্সর্গ জঙ্গিদের ভিতরে ঢুকতে বাধা দিয়েছেন, তা প্রশংসার যোগ্য। যদি ওঁরা বাধা না দিত তা হলে আরও অনেক বেশি প্রাণহানি হত।”
আরও পড়ুন: ‘এলএসি’-কে ‘এলওসি’ গড়া-ই লক্ষ্য চিনের
আরও পড়ুন: মুখে নেই চিন-নাম, ‘দখল’ নিয়ে নীরব, প্রধানমন্ত্রীর জবাবে প্রশ্ন
পাক স্টক এক্সচেঞ্জে হামলা: