ফাইল চিত্র।
তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণ, যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছেন এমন নারীর সংখ্যা নেহাতই কম নয়। এ বার ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ আনলেন প্রাক্তন মডেল অ্যামি ডরিস। একটি প্রথম সারির ব্রিটিশ দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অ্যামি দাবি করেছেন, দু’দশক আগে তাঁর সঙ্গে অত্যন্ত অশালীন আচরণ করেছিলেন বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ্যে আসার পরেই অ্যামির বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ এনেছে ট্রাম্পের প্রচার টিম। ব্রিটিশ দৈনিকের বিরুদ্ধেও আইনি পদক্ষেপ করার হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্পের প্রচার দলের আইনি উপদেষ্টা। ব্রিটিশ দৈনিকটি অবশ্য স্পষ্ট জানিয়েছে, তারা নিজেদের রিপোর্ট থেকে সরে আসবে না।
১৯৯৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর। অ্যামির বয়স তখন ২৪। সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, ইউএস ওপেন টুর্নামেন্টে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়েছিল। ট্রাম্পের বয়স তখন ৫১। ভিআইপি বক্সের শৌচাগারের সামনে ট্রাম্প তাঁকে জড়িয়ে ধরে চুমু খাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন অ্যামি। অ্যামির কথায়, ‘‘নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করেও পারিনি। ট্রাম্প এমন ভাবে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রেখেছিলেন আমায়।’’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে অ্যামির এ ভাবে মুখ খোলার পিছনে রাজনৈতিক অভিসন্ধি দেখছেন রিপাবলিকানরা। তাঁদের দাবি, ডেমোক্র্যাটদের পাল্লা ভারী করতেই অ্যামি প্রেসিডেন্টকে এ ভাবে প্যাঁচে ফেলতে চাইছেন।
অ্যামি অবশ্য এই সময়ে মুখ খোলার কারণও স্পষ্ট করেছেন। বলেছেন, ‘‘২০১৬ সালেও মুখ খুলতে পারতাম আমি। ট্রাম্প যখন প্রথম নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু আমার যমজ কন্যারা তখন খুবই ছোট। ওদের কথা ভেবেই সেই সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসি। কারণ আমি জানতাম এই অভিযোগটা আনলে সেটা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে আলোচনা হবে। এখন ওরা ১৩। তাই ওদের বোঝা উচিত, কারও ইচ্ছের বিরুদ্ধে কিছু করা উচিত নয়। আমি ওদের রোল মডেল হতে চাই। ওদের জানাতে চাই যে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমি চুপ করে থাকিনি।’’
অ্যামির এই অভিযোগ নিয়ে এখনও পর্যন্ত একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি ট্রাম্প। প্রেসিডেন্টের প্রচার দলের আইনি উপদেষ্টার বক্তব্য, অ্যামি তাঁর অভিযোগ প্রমাণ করার মতো সাক্ষী জোগাড় করতে পারবেন না। ঘটনার দিনের টিকিট-সহ বেশ কিছু ছবি অবশ্য ওই ব্রিটিশ দৈনিককে দিয়েছেন অ্যামি। সে দিন ঘটনাস্থলের আশেপাশে উপস্থিত বেশ কয়েক জন বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেছেন বলেও জানা গিয়েছে।
২০১৬-র প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে একাধিক মহিলা যৌন নির্যাতন, এমনকি ধর্ষণের অভিযোগ পর্যন্ত এনেছেন। ট্রাম্প বারবারই বলে এসেছেন, তাঁকে বদনাম করার চেষ্টা করছেন বিরোধীরা। অ্যামির বিরুদ্ধেও তাই তাঁর প্রচার দল সেই অভিযোগই এনেছে।
ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেন আবার এর মধ্যেই রুশ সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন। গত নির্বাচনের সময় থেকেই মার্কিন রাজনীতিতে পুতিন সরকারের হস্তক্ষেপের নানা অভিযোগ উঠেছে। পেনসিলভ্যানিয়ার স্ক্র্যানটনের টাউন হলে কাল একটি সভায় বাইডেন এ নিয়ে হুঁশিয়ারির সুরে বলেছেন, ‘‘আমি যদি জিতে আসি, রাশিয়াকে এর মূল্য চোকাতে হবে এ-টুকু বলতে পারি।’’
ট্রাম্পের টুইটে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি টুইট নিয়ে তাঁকে সতর্ক করলেন টুইটার কর্তৃপক্ষ। করোনা সংক্রমণ মোকাবিলার জন্য এ বারের নির্বাচনের একটা বড় অংশ মেলের মাধ্যমে হচ্ছে। সেই প্রক্রিয়া নিয়ে আগেও প্রশ্ন তুলেছিলেন ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার একটি টুইটে ফের জালিয়াতির অভিযোগ তোলেন তিনি। টুইটার কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ট্রাম্পের টুইট বিভ্রান্তিকর। তথ্য যাচাই না-করে প্রেসিডেন্ট এ ভাবে টুইট করতে পারেন না।