ফাইল চিত্র।
এগিয়ে আসছেন দু’টি মুখ। ডেমোক্র্যাটদের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী বার্নি স্যান্ডার্স এবং পিট বুটিজেগ। নিউ হ্যাম্পশায়ারে দু’টি প্রাইমারির শেষে আগামী নভেম্বরে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তৈরি হচ্ছেন তাঁরাই। এক জন ৭৮-এর অভিজ্ঞ রাজনীতিক আর অন্য জন তুলনায় অল্পবয়সি, সাউথ বেন্ড-এর প্রাক্তন মেয়র। গত সপ্তাহে আইওয়া ককাসও প্রথম দুই হিসেবে লড়াই শেষ করেছেন স্যান্ডার্স-বুটিজেগ।
চর্চায় রয়েছেন নিউ ইয়র্কের প্রাক্তন মেয়র, ধনকুবের মাইকেল ব্লুমবার্গও। তিনি বুধবার লাস ভেগাসে প্রাইমারিতে ট্রাম্পকে সমালোচনায় ধুয়ে দাবি করেন, ওঁর মতো ‘একটা উদ্ধত প্রতারক’ এবং ‘নিকৃষ্টতম প্রেসিডেন্টকে’ হটাতে তিনিই সেরা। যদিও লাস ভেগাসের ওই বিতর্কেই বাকি পাঁচ ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর মধ্যে এলিজ়াবেথ ওয়ারেন আবার ব্লুমবার্গকে আক্রমণ করেছেন নারীবিরোধী ও বর্ণবিদ্বেষী বলে। ব্লুমবার্গ সভায় বলেছেন, ‘‘আমার মনে হয়, সামনে দু’টো প্রশ্ন রয়েছে এখন। একটা হল, ট্রাম্পকে কে হারাতে পারেন? আর দ্বিতীয়টা, হোয়াইট হাউসে ঢোকার পরে আসল কাজটা কে করতে পারেন? আমার মতে, আমিই সেই প্রার্থী, যে এই দু’টি কাজই খুব দক্ষতার সঙ্গে করতে পারব।’’ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ব্লুমবার্গের দাবি, ‘‘আমি নিউ ইয়র্কের লোক। ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো নিউ ইয়র্কের এক জন উদ্ধত প্রতারককে কী ভাবে কাবু করতে হবে, আমিই জানি। মেয়র ছিলাম। জানি কী ভাবে দেশের সব চেয়ে বড়, জটিল আর বৈচিত্রময় শহরকে চালাতে হয়।’’
আর দু’দিন পরে নেভাডা ককাস। ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে মোট ন’জন প্রার্থী এখনও লড়াইয়ে আছেন। তার পরে ২৯শে সাউথ ক্যারোলাইনায় প্রাইমারি। ৩ মার্চ ‘সুপার টিউসডে’— ১৪টি প্রদেশের প্রাইমারি।
বার্নি স্যান্ডার্সের মতো ব্লুমবার্গও ৭৮ বছরে পা দিয়েছেন। তবে নির্বাচনে তিনি নিজের পকেট থেকে যে ভাবে অকাতরে অর্থ ঢালছেন, তা অনেক ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর কাছেই অসম্ভব ব্যাপার। স্যান্ডার্সের উদ্দেশে ব্লুমবার্গ বার্তা দিয়েছেন, বিমা পরিকল্পনা নিয়ে তাঁদের শিবিরের অবস্থান মোটেই বিশ্বাসযোগ্য নয়। প্রাক্তন মেয়রের কথায়, ‘‘যদি উনি দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হয়ে যান, নিশ্চিন্ত থাকুন, ট্রাম্প আরও চার বছর থাকছেন।’’
পাল্টা জবাবে স্যান্ডার্স বলেছেন, ‘‘ব্লুমবার্গ নিউ ইয়র্কে আফ্রো-মার্কিন এবং দক্ষিণ আমেরিকার মানুষকে যখন তখন আটকে তল্লাশির নির্দেশ দিয়েছেন। খুবই আপত্তিকর পদ্ধতি। এ ভাবে ভোটারের সংখ্যা বাড়বে বলে ওঁর মনে হয়?’’ স্যান্ডার্স মনে করছেন, ট্রাম্পকে হারাতে গেলে আমেরিকার ইতিহাসে সব চেয়ে বেশি সংখ্যক ভোটারকে ভোট দিতে হবে। ম্যাসাচুসেটসের সেনেটর ওয়ারেনের মতে, এক জন উদ্ধত ধনকুবেরের বিরুদ্ধে আর এক জন উদ্ধত ধনকুবেরকে প্রতিনিধি বাছলে বড়সড় ঝুঁকি নেবেন ডেমোক্র্যাটরা। এলিজ়াবেথ ওয়ারেনের মন্তব্য, ‘‘উনি তো মহিলাদের ‘মোটা মেয়েমানুষ’ এবং সমকামীদের ‘ঘোড়ামুখো’ বলেন। আমাদের যদি এমন এক প্রার্থী থাকেন, যিনি করদানের তথ্য গোপন করেন, মহিলাদের হেনস্থায় তাঁর নাম জড়ায় এবং বর্ণবিদ্বেষী বলে পরিচিতি থাকে, তা হলে ডেমোক্র্যাটদের জেতার কোনও সম্ভাবনা নেই।’’
বুটিজেগ আবার স্যান্ডার্স এবং ব্লুমবার্গকে বিঁধতে গিয়ে বলেছেন, ‘‘এক জন পার্টিকে শেষ করে দেবেন আর অন্য পার্টিকে কিনে নিতে চাইছেন— এঁদের মধ্যে আমাদের বাছতে হবে! আমরা বোধহয় এর চেয়ে ভাল কিছু করতে পারি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘ব্লুমবার্গ মনে করেন, অর্থই সব ক্ষমতার উৎস!’’