চিনের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জিয়াং জ়েমিন।
প্রয়াত হলেন চিনের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জিয়াং জ়েমিন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর। লিউকিমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে এবং একাধিক অঙ্গ বিকল হয়ে বুধবার নিজের শহর শাংহাইয়ে স্থানীয় সময় বেলা ১২টা ১৩ মিনিটে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে।
সরকারি বিবৃতিতে জ়েমিনকে ‘অসাধারণ নেতা, অসামান্য মার্ক্সবাদী, সমরকুশলী, কূটনীতিক ও দীর্ঘদিনের কমিউনিস্ট যোদ্ধা’ বলে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ‘তাঁর মৃত্যুতে চিনা কমিউনিস্ট পার্টি, সেনাবাহিনী এবং সব জনগোষ্ঠীর মানুষের অপূরণীয় ক্ষতি হল।’ তিয়েনআনমেন স্কোয়ারের বিক্ষোভের পরে কিছুটা অপ্রত্যাশিত ভাবেই চিনা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা হিসেবে বেছে নেওয়া হয় জ়েমিনকে। ১৯৮৯ সালে সরকার-বিরোধী সেই গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভ কড়া হাতে দমন করে কূটনৈতিক ভাবে কার্যত একঘরে হয়ে পড়েছিল চিন। ওই অবস্থা থেকে দেশকে বার করে এনে বহির্বিশ্বের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা— বিশেষত আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্কের শৈত্য কাটানো এবং সংস্কারপন্থী পদক্ষেপে ‘সমাজতান্ত্রিক বাজার অর্থনীতি’ প্রবর্তন করে দেশের অভাবনীয় অগ্রগতি ঘটানোর সিংহভাগ কৃতিত্ব জ়েমিনেরই, মনে করেন বিশেষজ্ঞেরা। তাঁর আমলেই ব্রিটেন হংকংয়ের এবং পর্তুগাল ম্যাকাওয়ের কর্তৃত্ব চিনকে হস্তান্তর করে। ২০০৮ সালে বেজিংয়ের অলিম্পিক আয়োজনের দায়িত্ব অর্জনের নেপথ্যেও বড় ভূমিকা ছিল জ়েমিনের।
১৯৯৬ সালে ভারতে এসেছিলেন জ়েমিন। ১৯৪৯ সালের পর থেকে চিনা কমিউনিস্ট পার্টির জমানায় ভারতে আসা চিনের প্রথম রাষ্ট্রপ্রধান তিনিই। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় উত্তেজনা কমিয়ে একগুচ্ছ আস্থাবর্ধক পদক্ষেপের লক্ষ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তিও সই হয়েছিল ওই সফরে।