বাঁ দিকে, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং ডান দিকে, চিনা বিদেশ দফতরের মুখপাত্র লিন জিয়ান। ছবি: সংগৃহীত।
পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি)-য় সংঘাতের অবসান ঘটাতে ‘টহলদারির সীমানা’ নির্ধারণের বিষয়ে ভারতের সঙ্গে সমঝোতা হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়ে দিল চিন। সোমবার বিদেশ সচিব বিক্রম মিশরি এবং বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর যে বিবৃতি দিয়েছিলেন, মঙ্গলবার চিনা বিদেশ দফতরের মুখপাত্র লিন জিয়ান কার্যত সেই সুরেই ‘ঐকমত্যের’ কথা জানিয়েছেন।
জিয়ান মঙ্গলবার বলেন, ‘‘সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে আমরা আলোচনার মাধ্যমে ইতিবাচক সমঝোতায় পৌঁছেছি। সমঝোতা কার্যকর করতে আমরা ভারতের সঙ্গে যৌথ ভাবে কাজ করব।’’ ঘটনাচক্রে, মঙ্গলবার ব্রিকস গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির (ভারত, রাশিয়া, চিন, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা) শীর্ষবৈঠকে যোগ দিতে রাশিয়ার কাজ়ানে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তারই মধ্যে এই বার্তা এল বেজিং থেকে।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে এলএসি পেরিয়ে পূর্ব লাদাখের বিভিন্ন এলাকায় এলএসি পেরিয়ে অনুপ্রবেশের অভিযোগ উঠেছিল চিনা ফৌজের বিরুদ্ধে। উত্তেজনার আবহে ওই বছরের ১৫ জুন গালওয়ানে চিনা হামলায় নিহত হয়েছিলেন ২০ জন ভারতীয় সেনা। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতীয় জওয়ানদের পাল্টা হামলায় বেশ কয়েক জন চিনা সেনাও নিহত হয়েছিলেন। গালওয়ান-কাণ্ডের পর থেকেই কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমনে দফায় দফায় বৈঠক শুরু হয়েছিল। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে চুশুল-মলডো পয়েন্টে দুই সেনার কোর কমান্ডার স্তরের বৈঠকে এলএসির কিছু এলাকায় ‘মুখোমুখি অবস্থান থেকে সেনা পিছনো’ (ডিসএনগেজমেন্ট) এবং ‘সেনা সংখ্যা কমানো’ (ডিএসক্যালেশন)-র বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছিল।
কিন্তু প্যাংগং হ্রদ লাগোয়া ফিঙ্গার এরিয়া, উত্তর-পূর্বে ডেপসাং উপত্যকা, দক্ষিণ পূর্ব লাদাখের ডেমচক -সহ বিভিন্ন এলাকা নিয়ে সমস্যা মেটেনি। এই আবহে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা চলতে থাকে। সোমবার জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘পূর্ব লাদাখের এলএসিতে ‘ডিসএনগেজমেন্ট’ (মুখোমুখি অবস্থান থেকে সেনা পিছনো) প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে।’’ তিনি জানান, ২০২০ সালের মে মাসের আগে দু’পক্ষের সেনা এলএসসি যে এলাকা পর্যন্ত টহলদারি করতে যেত, সাড়ে চার বছর পরে সেই ব্যবস্থাই পুনর্বহাল হচ্ছে। তবে ‘ঐকমত্যে’র দাবি করলেও ‘তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে’ নির্দিষ্ট করে ২০২০ সালের মে মাসের পরিস্থিতি পুনর্বহালের কথা বলেননি চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র।