S Jayashankar

কোনও কড়া শব্দই পাকিস্তানের জন্য যথেষ্ট নয়: জয়শঙ্কর

২০০১ সালে দিল্লিতে সংসদ ভবনে পাকিস্তানের মদতপ্রাপ্ত জঙ্গিদের আক্রমণ, ২০০৮-এ মুম্বই হামলা, প্রত্যেকদিন পাক জঙ্গিদের ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টার বিবরণ দেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২৩ ০৭:১০
Share:

সাইপ্রাস ও অস্ট্রিয়া সফরের শেষে পাকিস্তান ও চিনকে নিয়ে যথেষ্ট আক্রমণাত্মক মেজাজে দেখা গিয়েছে জয়শঙ্করকে। ফাইল ছবি।

পাকিস্তানকে তীক্ষ্ণ ভাষায় আক্রমণ করলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। অস্ট্রিয়ার এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে তিনি বলেছেন, পাকিস্তান সম্পর্কে কড়া শব্দ ব্যবহারের কোনও সীমা থাকাই উচিত নয়। পাশাপাশি, চিনকেও নিশানা করে জয়শঙ্করের অভিযোগ, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার স্থিতাবস্থা একতরফা ভাবে লঙ্ঘন করেছে বেজিং।

Advertisement

সাইপ্রাস ও অস্ট্রিয়া সফরের শেষে পাকিস্তান ও চিনকে নিয়ে যথেষ্ট আক্রমণাত্মক মেজাজে দেখা গিয়েছে জয়শঙ্করকে। বছরের শুরুতেই বিদেশন্ত্রীর এমন আক্রমণাত্মক ব্যাটিং দেখে কূটনীতি বিশেষজ্ঞদের অনেকেই বলছেন, জি-২০ সম্মেলনের বিভিন্ন মঞ্চে ভারতের উপর রাশিয়া সংক্রান্ত যে চাপ (মস্কোকে বুঝিয়ে হিংসা বন্ধের) আসতে চলেছে, সে ব্যাপারে অবহিত সাউথ ব্লক। সে কারণে আক্রমণকেই রক্ষণের সেরা অস্ত্র করে তুলতে চাইছে মোদী সরকার।

অস্ট্রিয়ার সংবাদমাধ্যম ওআরএফ-এর এক সাংবাদিক জয়শঙ্করকে প্রশ্ন করেন, “বেশ কয়েক সপ্তাহ আগে আপনি আপনার প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানকে বলেছিলেন সন্ত্রাসবাদের আঁতুরঘর। এটা খুব একটা কূটনৈতিক বাক্য নয় বোধহয়, তাই না?” জবাবে জয়শঙ্কর বলেন, “হ্যাঁ, আমি ঠিক এটাই বলেছিলাম, যদিও সেই সময় পাকিস্তানের নাম করিনি। তবে আমি একজন কূটনীতিবিদ, তার মানে তো মিথ্যুক নই! আঁতুরঘরের তুলনায় আমি অনেক কড়া শব্দ ব্যবহার করতে পারতাম। আমাদের দেশ ভারতের সঙ্গে যা ঘটছে, তার তুলনায় আঁতুরঘর তো নেহাতই কূটনৈতিক একটি শব্দ।”

Advertisement

এরপর ২০০১ সালে দিল্লিতে সংসদ ভবনে পাকিস্তানের মদতপ্রাপ্ত জঙ্গিদের আক্রমণ, ২০০৮-এ মুম্বই হামলা, প্রত্যেকদিন পাক জঙ্গিদের ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টার বিবরণ দেন তিনি। বিদেশমন্ত্রীর কথায়, “যখন কোনও শহরে প্রকাশ্য দিবালোকে জঙ্গি শিবির বহাল তবিয়তে বেঁচেবর্তে থাকে, তাদের পুঁজি জোগানো হয়, তখন আপনি কি বিশ্বাস করতে বলেন যে পাকিস্তান এসবের কিছুই জানে না? ইউরোপকে এই সব কাজকর্মের তীব্র নিন্দা করতে আমি তো শুনি না।”

অস্ট্রিয়ারই অন্য একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিদেশমন্ত্রীকে চিন নিয়েও সরব হতে শোনা গিয়েছে। তাঁর কথায়, “প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার স্থিতাবস্থা একতরফা ভাবে নষ্ট না করার ব্যাপারে চিনের সঙ্গে আমাদের চুক্তি রয়েছে। কিন্তু তারা (চিন) একতরফা ভাবে সেটা করেছে।” সম্প্রতি ভারত ও চিনের মধ্যে ১৭তম সামরিক স্তরের বৈঠক হয়েছে। সীমান্তের পশ্চিম সেক্টরে সুস্থিতি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার প্রশ্নে একমত হয়েছে দুই দেশ।

চিন ও পাকিস্তানকে নিয়ে সরব হওয়াই শুধু নয়, রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য দেশগুলিকেও একহাত নিতে দেখা গিয়েছে জয়শঙ্করকে। স্থায়ী সদস্যের মধ্যে রয়েছে চিনও। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার করা নিয়ে গত এক দশক ধরে ধারাবাহিক ভাবে গলা ফাটিয়ে আসছে ভারত। নরেন্দ্র মোদীর জমানায় সেই দাবিকে আরও চড়ানো হয়েছে। জয়শঙ্করের মন্তব্য, “যারা রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য, তারা নিশ্চিত ভাবেই সুবিধা ভোগ করছেন। ফলে নতুন সদস্য নেওয়ার বা পরিষদের সংস্কার করার ব্যাপারে তাদের উৎসাহ নেই।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement