আয়েশা মালিক।
গত বছর সেপ্টেম্বরেই পাক সুপ্রিম কোর্টের প্রথম মহিলা বিচারপতি হিসেবে তাঁর নাম সুপারিশ করেছিল জুডিশিয়াল কমিশন অব পাকিস্তান (জেসিপি)। কিন্তু কমিশনের চার সদস্য তাঁর এই পদোন্নতির পক্ষে সওয়াল করলেও বাকি চার সদস্য তাঁর বিরুদ্ধে ভোট দেন। এ বার অবশ্য বিচারপতি আয়েশা মালিকের পক্ষেই ভোট পড়েছে বেশি। পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালতের প্রথম মহিলা বিচারপতি হওয়া থেকে আর মাত্র এক ধাপ দূরে রয়েছেন তিনি।
হার্ভার্ড আইন স্কুলের স্নাতক বিচারপতি আয়েশা বর্তমানে লাহোর হাই কোর্টের বিচারপতি। এর আগে বহু গুরুত্বপূর্ণ এবং নজিরবিহীন রায় দিয়েছেন তিনি। যার মধ্যে কোনও নির্বাচনী প্রার্থীর সম্পত্তি ঘোষণা অন্যতম। গত বছর ৯ সেপ্টেম্বর জেসিপি-র বৈঠকে তাঁর নাম নিয়ে প্রথম আলোচনা হয়েছিল। গত কাল বিষয়টি নিয়ে ফের বৈঠকে বসেছিল জেসিপি, যার মাথায় রয়েছেন পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি গুলজ়ার আহমেদ। সেই বৈঠকেই আয়েশার নাম সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী বিচারপতি হিসেবে চূড়ান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে পাক সংবাদমাধ্যমগুলি।
জেসিপি-র সুপারিশ এর পরে পার্লামেন্টের কমিটির কাছে যাবে। ওই কমিটির সিদ্ধান্তই এ বিষয়ে চূড়ান্ত বলে মেনে নেওয়া হয়। বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, সাধারণত জেসিপি-র সুপারিশে আপত্তি করে না এই কমিটি। ফলে সে দিক থেকে দেখতে গেলে বিচারপতি আয়েশার পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের প্রথম মহিলা বিচারপতি হওয়া কার্যত পাকা।
সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি আয়েশা মালিক ২০৩১ সালের জুন মাস পর্যন্ত বহাল থাকবেন। অবসরের আগে তিনিই হবেন পাক সর্বোচ্চ আদালতের সবচেয়ে প্রবীণ বিচারপতি। সেই হিসেবে দেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবেও পদোন্নতি হতে পারে তাঁর। আর সেটা হলে বিচারপতি আয়েশা মালিকই হবেন দেশের প্রথম মহিলা প্রধান বিচারপতি।
তবে এই নিয়োগ নিয়ে দেশে অসন্তোষও রয়েছে। পাক সুপ্রিম কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি লতিফ আফ্রিদি জেসিপি-র এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, দেশের অন্তত পাঁচটি হাই কোর্টে বিচারপতি আয়েশার থেকে প্রবীণ বিচারপতিরা রয়েছেন যাঁরা সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী বিচারপতি হওয়ার যোগ্য। জেসিপি বিচারপতি আয়েশার পদোন্নতি চূড়ান্ত করে দিলে দেশ জুড়ে গণবিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন আফ্রিদি। এমনকি পাক আদালত বয়কটের হুমকিও দিয়ে রেখেছেন তিনি।