মায়ের কাটআউট-সহ পাউলো
মা চেয়েছিলেন, তাই তো এটা হয়েছে!
বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিগ্রি অর্জনের পরে পাউলো জন আলিনসংয়ের এই স্বীকৃতি ফিলিপিন্স ছাড়িয়ে এখন গোটা বিশ্বর নজরে। যা মনে করিয়ে দিয়েছে গত বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ওয়ালিউল্লার কথাও, যিনি গ্রাম থেকে তাঁর গরিব কৃষক বাবা-মাকে সমাবর্তনের পোশাক পরিয়ে রিকশা চালিয়ে নিয়ে এসেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে।
ফেসবুকে লিখেছিলেন— ‘আমি তো নই, বাবা আর মা-ই আজ এই ডিগ্রি অর্জন করেছেন।’
ফিলিপিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ়নেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ছাত্র পাউলো একাকী মায়ের বড় ছেলে। কষ্ট করে ছেলের পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন মা। লক্ষ্য ছিল একটাই— পাউলো এক দিন স্নাতক হবে। সেটা আর দেখে যাওয়া হয়নি তাঁর। বছর দুই আগে অসুস্থ হয়ে মারা যান মা। দিন কয়েক আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে কালো রোব আর বিশেষ টুপি পরে হাজির হন পাউলো, সঙ্গে মায়ের একটি প্রমাণ সাইজের ছবির কাটআউট।
বাবা-মাকে নিয়ে ওয়ালিউল্লা
দর্শকদের বসার জায়গায় সেই ছবি দাঁড় করিয়ে মঞ্চে উঠে ডিগ্রি নিয়েছেন পাউলো। নেমে এসে ‘মায়ের সঙ্গে’ ছবি তুলেছেন। লাজুক মুখে বলেছেন, ‘‘চেয়েছিলাম, আমার জীবনের এই গুরুত্বপূর্ণ দিনটিতে মা যেন হাজির থাকেন। অন্যরা যেমন ডিগ্রি নিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে ছবি তুলবে, আমিও তুলব আমার মায়ের সঙ্গে।’’
পাউলোর টুইট, ‘‘আমার সব চেয়ে সুন্দর মাকে! মা, তোমার বড় ছেলে আজ গ্র্যাজুয়েট। আশা করি তুমি খুশি হয়েছ। তুমি যা চেয়েছিলে, সেটাই হয়েছে। তোমাকে খুব ভালবাসি মা!’’
পাউলোর সঙ্গে মিলটি হল— ওয়ালিউল্লাও ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ়নেস অ্যাকাউন্টিং ও ইনফর্মেশন সিস্টেম-এর ছাত্র। মায়ের মাথায় পরিয়ে দিয়েছিলেন সমাবর্তনের টুপিটি। বাবার গায়ে কালো রোব। ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘মা আমার জীবনের মুকুট, তাই সমাবর্তনের হ্যাট-টা মায়ের। আব্বা সারা জীবনই আগলে রেখেছেন সব আঘাত থেকে, তাই গাউনটা আব্বার ঘামে ভেজা শরীরটাতেই বেশি মানায়। এই আমার সমাবর্তন!’
গরিব কৃষকের ছেলে ওয়ালিউল্লা। কঠোর পরিশ্রমে ছেলের পড়াশোনা চালিয়েছিলেন বাবা-মা। সেই ত্যাগের স্বীকৃতি দিতে বাবা-মাকে সমাবর্তনের পোশাক পরিয়ে রিকশায় বসিয়ে নিজেই চালিয়ে নিয়ে যান বিশ্ববিদ্যালয়ে। ডিগ্রি নিয়ে এসে ছবি তোলেন সপরিবার। ঠিক যেমন পাউলো ছবি তুলেছেন হারিয়ে যাওয়া মায়ের ছবির কাটআউটের সঙ্গে।
পাউলোর টুইটে মন্তব্য এক জনের, ‘ছেলের সাফল্যের পিছনে সব বাবা-মায়ের ত্যাগ ও পরিশ্রমকে পুত্রের কুর্নিশ!’