যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজ়ার ছবি। ছবি: রয়টার্স।
বহু দিন হল মেয়েকে দেখেননি। কারণ, তাঁর ন’বছরের কন্যা হামাসের হাতে পণবন্দি। তাই গাজ়ায় যুদ্ধবিরতি এবং পণবন্দিদের মুক্তি নিয়ে চুক্তির আবহে ইজ়রায়েলি সরকারের কাছে মেয়েকে ফিরিয়ে আনার আর্জি জানালেন এক ব্যক্তি।
থমাস হ্যান্ড নামে ওই ইজ়রায়েলি ব্যক্তির দাবি, গত ৭ অক্টোবর ইজ়রায়েলে হামলার সময় হামাস যাঁদের অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছে, তাঁদের মধ্যে তাঁর ন’বছর বয়সি কন্যা এমিলিও রয়েছে। ইজ়রায়েলি সরকারের কাছে বার বার মেয়েকে ফিরিয়ে আনার আর্জি জানিয়েও লাভ হয়নি। তবে ইজ়রায়েল এবং হামাস চার দিনের যুদ্ধবিরতি নিয়ে চুক্তির পর মেয়েকে ফিরিয়ে আনতে উঠেপড়ে লেগেছেন থমাস। বার বার বিভিন্ন মন্ত্রকে কড়া নেড়ে চলেছেন। তাঁর কাতর আর্জি, হামাসের হাত থেকে যে ৫০ জন পণবন্দিকে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে, তাদের মধ্যে যেন তাঁর মেয়েও থাকে।
সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’কে থমাস বলেন, ‘‘যুদ্ধবিরতির চুক্তি উভয় পক্ষের জন্য খুব ভাল। আমি আশা রেখেছি যে, মেয়ে ফিরবে। কিন্তু যত ক্ষণ না আমি মেয়েকে চোখের সামনে দেখছি, যত ক্ষণ আমি ওকে ছুঁতে পারছি, তত ক্ষণ আমি কিছু বিশ্বাস করব না।’’
হামাসের হাতে পণবন্দি এমিলি হ্যান্ড। ছবি: সংগৃহীত।
লন্ডনে এক সংবাদিক সম্মেলনে থমাস তাঁর মেয়ের অপহরণকে ‘দুঃস্বপ্ন’ বলে বর্ণনা করে বলেন, ‘‘আমি জানি ইজ়রায়েলি সরকার এবং সেনাবাহিনী আমার মেয়েদের ফিরিয়ে আনার জন্য তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী সব করবে।’’
থমাসের কথায়, ‘‘এখন জীবনের একমাত্র লক্ষ্য আমার আদরের মেয়ে এমিলিকে ফিরিয়ে আনা। তার জন্য যা যা করার করব।’’
প্রাথমিক ভাবে মনে করা হয়েছিল, ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইজ়রায়েলে হামাসের আকস্মিক হামলায় নিহত হয়েছে এমিলি। পরে খবর পাওয়া যায়, সে হামাসের হাতে পণবন্দি। সম্প্রতি ইজ়রায়েলের বিদেশ মন্ত্রক ফেসবুক পেজে এমিলির একটি ভিডিয়ো শেয়ার করে লেখে, ‘‘এই ফুটফুটে মেয়েটি হামাসের হাতে নিহত হয়েছিল বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু আমরা জানতে পারি যে, সে হামাসের হাতে বন্দি। অনুগ্রহ করে এটি শেয়ার করুন এবং এমিলিকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে আমাদের সাহায্য করুন।’’
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার কাতারের মধ্যস্থতায় চুক্তিবদ্ধ হয় হামাস ও ইজ়রায়েল। ঠিক হয়, সাময়িক ভাবে যুদ্ধ বন্ধ রাখা হবে এবং বন্দি বিনিময় করা হবে। এ-ও ঠিক হয় যে, ইজ়রায়েলের হাতে বন্দি ১৫০ জন প্যালেস্টাইনি মহিলা এবং কিশোর-কিশোরীদের বিনিময়ে ১৯ বছরের কম বয়সি ৫০ জন মহিলা এবং শিশুকে মুক্তি দেবে হামাস।
শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে চার দিনের জন্য গাজ়ায় সাময়িক সংঘর্ষ-বিরতি শুরু হওয়ার কথা। শুক্রবারই প্রথম দফার বন্দি-বিনিময়ও হবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিকেল ৪টে নাগাদ বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে। ১৩ জনকে ছাড়বে হামাস।