অ্যালেস্কি মস্কালইয়োভ।
বৃষ্টির মতো ধেয়ে আসছে ক্ষেপণাস্ত্র। সেগুলি এসে আছড়ে পড়ছে ইউক্রেনের এক মা-মেয়ের উপরে। স্কুলের ছবি আঁকার খাতায় এমনই একটা ছবি এঁকেছিল রাশিয়ার ইয়েফ্রেমভ শহরের বাসিন্দা বারো বছরের ছোট্ট মেয়ে মাশা। স্কুল কর্তৃপক্ষের কপালে গভীর ভাঁজ ফেলার জন্য যা যথেষ্ট ছিল। তাঁরা বিষয়টি পুলিশকে জানান। গত বছর এপ্রিলের এই ঘটনার পরে কড়া নজরদারিতে রাখা হয় মাশার পরিবারকে। শেষমেশ মেয়েকে উস্কানি এবং রুশ সেনাবাহিনীর মানহানির দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন মাশার বাবা অ্যালেস্কি মস্কালইয়োভ। আজ তাঁর দু’বছরের জন্য নির্বাসনের সাজা ঘোষণা হয়েছে বলে দাবি করেছে একটি আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর পরে রাশিয়া নতুন আইন জারি করে জানিয়েছিল, কেউ সেনাবাহিনীর মানহানি করলে ১৫ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। ওই সংগঠনের দাবি, মাশার ছবির কথা প্রকাশ্যে আসার পরে তার বাবার সমাজমাধ্যমের উপরে নজর রাখতে শুরু করে পুলিশ-প্রশাসন। অভিযোগ ওঠে, সেনাবাহিনীর সমালোচনা করে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছেন মস্কালইয়োভ। বিচারে ‘দোষী’ সাব্যস্ত হয়েছেন তিনি।
সংগঠন সূত্রের খবর, বিচার চলাকালীন ঘরবন্দি করে রাখা হয়েছিল মস্কালইয়োভকে। আর মাশাকে পাঠানো হয়েছিল সরকারি হোমে। বাবার সাজা ঘোষণার পরে ছোট্ট মাশার সঙ্গে হোমে দেখা করতে গিয়েছিলেন মস্কালইয়োভের আইনজীবী। তিনি বলেন, হোমে নতুন ছবি এঁকেছে মাশা। ছবির তলায় লেখা, ‘‘বাবা, তুমিই আমার হিরো’’।
এ দিকে, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধে কিভের হাত শক্ত করতে ট্যাঙ্ক ও অন্যান্য সমরাস্ত্র পাঠালো ব্রিটেন এবং জার্মানি। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জানিয়েছেন, চ্যালেঞ্জার ২ ট্যাঙ্ক পাঠিয়েছে ব্রিটেন। অন্য দিকে, জার্মানির প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, তাঁদের পাঠানো ১৮টি বিধ্বংসী লেপার্ড ২ ট্যাঙ্ক, আগ্নেয়াস্ত্র, সমরাস্ত্রের যন্ত্রাংশ আজ কিভে পৌঁছেছে।
যুদ্ধের শুরু থেকে আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলি ইউক্রেনে অস্ত্রসাহায্য পাঠালেও খানিকটা নীরব ছিল জার্মানি। এ নিয়ে তাদের পশ্চিমি দেশগুলির সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছে। জার্মানি, নরওয়ে, সুইডেনের মতো দেশগুলি রাশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণে জ্বালানি গ্যাস আমদানি করে। এ ক্ষেত্রে নিজেদের স্বার্থে জার্মানি চুপ করে রয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। আজ কিভে লেপার্ড ট্যাঙ্ক পাঠিয়ে সেই অভিযোগের ভার তারা লাঘব করল বলে মনে করছে কূটনীতি মহল।