শেখ হাসিনা। —ফাইল ছবি।
গত ৫ অগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন ছাত্র-জনতার বিজয় মিছিল চলাকালীন আওয়ামী লীগের দুষ্কৃতীদের গুলিতে স্বামী নিহত হয়েছেন উল্লেখ করে এক মহিলা শেখ হাসিনা-সহ ১৩০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন। তিন মাস পরে তাঁর স্বামী থানায় এসে হাজির হয়ে জানালেন, তাঁর অজান্তে স্ত্রী তাঁকে ‘মৃত’ দেখিয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে অভিযোগ দায়ের করেছেন!
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ জানাচ্ছে, মঙ্গলবার এই ঘটনা ঘটেছে রাজধানী ঢাকার আশুলিয়ায়। প্রকাশিত খবরে জানানো হয়েছে, গত ২৪ অক্টোবর কুলসুম বেগম (২১) নামে ওই মহিলা তাঁর স্বামী মহম্মদ আল আমিন মিয়াকে হত্যার অভিযোগ এনে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে মামলা করেছিলেন। তাতে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী হাসিনা-সহ ১৩০ জনকে ‘অভিযুক্ত’ করা হয়। পরে ৮ নভেম্বর ঢাকার আশুলিয়া থানায় মামলাটি তদন্তের জন্য নথিভুক্ত হয়েছিল।
অভিযোগপত্রে কুলসুম জানান, তাঁর বাড়ি মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার স্বল্প সিংজুরি বাংগালা গ্রামে। বর্তমান ঠিকানা আশুলিয়ার জামগড়া। গত ৫ অগস্ট স্বামীকে খুনের খবর পেয়ে তিনি আশুলিয়া নারী ও শিশু হাসপাতালে গিয়েছিলেন বলে তাঁর দাবি। কিন্তু কুলসুম পুলিশকে জানান থানায় গিয়ে তিনি জানতে পারেন ‘পরিচয়হীন দেহ’ হিসাবে চিহ্নিত করে আমিনকে কবর দেওয়া হয়েছে। পরে ভিডিয়ো এবং ছবি দেখে তিনি স্বামীকে চিহ্নিত করেন। কিন্তু আমিনের দাবি, ঘটনার দিন তিনি মৌলভীবাজারের জুড়ি উপজেলায় ছিলেন। আদতে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার বাসিন্দা ওই ব্যক্তি মঙ্গলবার মিথ্যা মামলায় অভিযোগ তুলেছেন নিজের স্ত্রীর বিরুদ্ধে।
ঘটনাচক্রে, মঙ্গলবারই ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী হাসিনার বিরুদ্ধে ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করার জন্য আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলকে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল (আইসিটি)। আওয়ামী লীগের সভানেত্রীকে গ্রেফতারের উদ্দেশ্যেই অন্তর্বর্তী সরকারের আবেদন মেনে এই বার্তা দেওয়া হয়েছে ইন্টারপোলকে। কিন্তু কোটা সংস্কার আন্দোলন পর্বে ‘গণহত্যা এবং মানবতা বিরোধী অপরাধ’-এর অভিযোগে হাসিনা-সহ আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাগুলির সত্যতা নিয়েই এ বার প্রশ্ন তুলল কুলসুম-কাণ্ড।