ফের তালিবান রাজ আফগানিস্তানে!
প্রেসিডেন্টের বাসভবনে রয়েছেন তালিবান প্রধান মোল্লা আবদুল গনি বরাদর। কাতার এবং আমেরিকার কূটনীতিবিদরাও রয়েছেন সেখানে।
আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ইস্তফা দিলেন আশরফ গনি। দেশের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী জানিয়েছে, কাবুলে হামলা হবে না, এই শর্তে তালিবানের সঙ্গে সমঝোতা হয়েছে তালিবানের সঙ্গে। আফগান বাহিনী এবং স্পেশাল ফোর্সকে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার নির্দেশ।
আফগানিস্তান নিয়ে জরুরি বৈঠক রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে। রাশিয়ার দাবি, গোটাটাই পরিকল্পিত।
ক্ষমতার শান্তিপূর্ণ হস্তান্তরে রাজি সরকার। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, জানালেন আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ক মন্ত্রক
আমেরিকা এবং ন্যাটো-র সঙ্গে গনি জরুরি বৈঠক করছেন বলে খবর। তাঁর সঙ্গে সমঝোতা করতে তালিবানের একটি প্রতিনিধি দল প্রেসিডেন্টের বাসভবনের উদ্দেশে রওনা দিচ্ছে, যাতে শান্তিপূর্ণ ভাবে ক্ষমতার হস্তান্তর হয়।
রকাবুলে নিজেদের দূতাবাস খালি করবে না বলে জানিয়ে দিল রাশিয়া।
গায়ের জোরে কাবুল দখল করা তাদের লক্ষ্য নয় বলে জানাল তালিবান। সংগঠনের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘‘দর কষাকষি চলছে, যাতে নিরাপদে এবং শান্তিপূর্ণ ভাবে ক্ষমতার হস্তান্তর ঘটে। সাধারণ মানুষ যেন হিংসার বলি না হন, সে দিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে। কাবুলের মানুষের জীবন বিপন্ন হোক, তা একেবারেই চাই না আমরা।’’
সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক তালিবান মুখপাত্র জানিয়েছেন, যোদ্ধাদের কাবুলের বাইরে অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে। এখনই শহরে ঢুকতে বারণ করা হয়েছে সকলকে। যদিও স্থানীয়দের দাবি বিনা বাধায় যোদ্ধারা ঢুকে আসছেন রাজধানীতে।
হিংসা এড়াতে যোদ্ধাদের নিষেধ করল তালিবান। যে বা যাঁরা কাবুল ছেড়ে চলে যেতে ইচ্ছুক, তাঁদের নিরাপদে বেরিয়ে যেতে দেওয়ার নির্দেশ। মহিলাদের নিরাপদ স্থানে চলে যেতে বলা হয়েছে বলে সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন এক তালিবান নেতা।
গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশের ৩৪টি প্রদেশের মধ্যে ১৮টি তাদের হাতে ছিল। কিন্তু এর পর কার্যত ঝড়ের গতিতে এগোতে শুরু করে তালিবান। একে একে হেরাট, আয়বাক, গজনি, কন্দহর, তালিকান, কুন্দুজ দখল করে তারা। উত্তর দিক থেকে কাবুলের প্রবেশ পথ মাজার-ই-শরিফও একদিনেই দখল করে নেয় তালিবান। তার পর রবিবার সকালে দক্ষিণের জালালাবাদ দখল করে তারা। রবিবার সকাল পর্যন্ত মোট ২৬টি প্রদেশ তালিবানের দখলে ছিল।
তালিবানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তি মেনে এ বছর ৯ মার্চ থেকে সেনা সরাতে শুরু করে আমেরিকা। তার পর থেকেই ডালপালা মেলতে শুরু করে তালিবান। জুন মাসের শেষ দিকে সরাসরি আফগান বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে বাধে তাদের। তাতে আফগান বাহিনীকে পরাস্ত করে দেশের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে এগোতে শুরু করে তালিবান। তার পর দেড় মাসের মধ্যেই আফগানিস্তানের দখল নিল তারা।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে আফগানিস্তানের স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনাই তাঁর প্রধান লক্ষ্য বলে শনিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে গিয়ে বলেছিলেন আশরফ গনি। রাতে মাজার-ই-শরিফ দখল হয়ে যাওয়ার পর থেকে তাঁকে আর জনসমক্ষে দেখা যায়নি। তাঁ দেশত্যাগ নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। অন্য দিকে, তালিবানের সঙ্গে ভিতরে ভিতরে আমেরিকার কথা হয়ে গিয়েছে বলেও জানা যাচ্ছে কূটনৈতিক সূত্রে।
পতনের মুখে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল। চারিদিক থেকে পিলপিল করে তালিবান যোদ্ধারা ঢুকতে শুরু করেছে। আগে থেকেই সেখানে সমস্ত দফতর খালি করে দিয়েছে আশরফ গনি সরকার। হেলিকপ্টার পাঠিয়ে আমেরিকা-সহ অন্যান্য দেশও নিজেদের দূতাবাস খালি করে নিয়েছে। প্রাণভয়ে কাবুল ছেড়েছেন বহু মানুষ। জালালাবাদের মতো কাবুলও বিনাযুদ্ধে তালিবানের হাতে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কূটনীতিবিদরা।