ডিগ্রি জাল করে ইংল্যান্ডে ২০ বছর ডাক্তারি করে গেলেন এক মহিলা। ছবি: সংগৃহীত।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের ডিগ্রি জাল করে ব্রিটেনের সরকারি চিকিৎসা পরিষেবায় এক টানা ২০ বছর ধরে রোগী দেখে বেড়ালেন এক মহিলা। শেষ পর্যন্ত জালিয়াতির পর্দাফাঁস। আপাতত সাজা ঘোষণার অপেক্ষায় ৬০ বছরের ঝোলিয়া আলেমি।
বিগত দুই দশক ধরে ইংল্যান্ড, ওয়েলস এবং স্কটল্যান্ডের হাসপাতালে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ হিসাবে কাজ করেছেন আলেমি। পেয়েছেন সরকার থেকে চিকিৎসকদের দেওয়া সমস্ত সুযোগ-সুবিধা। প্রতি মাসে পেয়েছেন বেতনও। আলেমি নিজেকে চিকিৎসক হিসাবে দাবি করে সব মিলিয়ে ১০ লক্ষ পাউন্ডেরও বেশি আয় করেছেন সারা জীবনে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ধরা পড়ে গেল জারিজুরি। বুধবার, তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে ম্যানচেস্টারের ক্রাউন কোর্ট। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি তাঁর সাজা ঘোষণা হবে। বিচারক হিলারি ম্যানলে ইঙ্গিত দিয়েছেন, দীর্ঘ সময় জেলের গরাদের পিছনে কাটাতে হবে ভুয়ো চিকিৎসককে।
জানা গিয়েছে, ১৯৯৫ সালে ইংল্যান্ডের জেনারেল মেডিক্যাল কাউন্সিলে (যে কাউন্সিল ব্রিটেনে চিকিৎসকদের নথিভুক্ত করে) আলেমি ভুয়ো শংসাপত্র দিয়ে দাবি করেন, তিনি নিউ জ়িল্যান্ডের অকল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি লাভ করেছেন। সেখানে লেখা আছে ছ’বছর ‘মেডিক্যাল ট্রেনি’ হিসাবে পাঠ নিয়েছেন এবং তাঁর ফলও যথেষ্ট ভাল। যদিও সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের খাতা সে কথা বলছে না। জানা গিয়েছে, তিনি সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন ঠিকই কিন্তু প্রথম পর্বের পরই পড়া ছেড়ে দেন। ১৯৯৮ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত ব্রিটেনের সরকারি চিকিৎসা পরিষেবায় কাজ করেছেন ওই ভুয়ো ডিগ্রি দেখিয়ে।
ভারতের মতো উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশে ভুয়ো চিকিৎসকের কারবারের কথা হামেশাই শোনা যায়। কিন্তু ব্রিটেনের মতো দেশে সরকারি চিকিৎসা পরিষেবায় যে ভাবে ডিগ্রি জাল করে এক টানা দু’দশক নিজেকে চিকিৎসক হিসাবে পরিচয় দিয়ে রমরমিয়ে চাকরি করে গেলেন আলেমি, তাতে অনেকেরই চোখ কপালে উঠেছে। প্রশ্ন উঠছে, গোটা দেশে আলেমিই কি একমাত্র এমন ভুয়ো চিকিৎসক? না কি আরও এমন ঘটনা আগামী দিনে প্রকাশ্যে আসবে? যে রোগীদের চিকিৎসা হয়েছে ভুয়ো চিকিৎসকের হাতে, তাঁরাও আশঙ্কায়।