ছবি এএফপি।
চিনের শিংজিয়াং প্রদেশে নতুন তৈরি হয়েছে ভবনটি। ঢোকার মুখে দৈত্যাকার তোরণ। তার মাথায় পতপত করে উড়ছে চিনা কমিউনিস্ট পার্টির লাল পতাকা। তোরণ লাগোয়া সুউচ্চ প্রাচীরে লেখা মাও জে দংয়ের বাণী, ‘উদ্দেশ্য ও আদর্শের প্রতি আমাদের সৎ থাকতে হবে।’ তথ্য বলতে এটুকুই। দেখে বোঝার উপায় নেই, সেটি কোনও প্রশাসনিক ভবন না অন্য কিছু। তবে ৬০ একর জুড়ে তৈরি ওই ভবনের বাইরে ৪৫ ফুট উঁচু দেওয়াল আর তা ঘিরে পাহারার কড়াকড়ি জানান দেয়, কোনও বিশেষ ব্যবস্থার জন্যই তৈরি করা হয়েছে ভবনটি।
সম্প্রতি ‘অস্ট্রেলিয়ান স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউট’ নামের একটি গবেষণা সংস্থা এবং মার্কিন সাংবাদিকদের জোগাড় করা তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে জানা গিয়েছে, ভবনটি সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমদের জন্য তৈরি নতুন ধরনের ডিটেনশন ক্যাম্প। এ বছর জানুয়ারিতেই সেটি চালু হয়েছে। ভিতরে ১৩টি পাঁচ-তলা আবাসন রয়েছে। যাতে অন্তত ১০ হাজার মানুষ থাকতে পারে। ভিন্ দেশের গবেষকদের মতে, যা আদতে জেলখানা আর মগজধোলাই-এর ঘাঁটি ছাড়া আর কিছুই নয়।
উইঘুর মুসলিমদের উপরে দমন-পীড়নের কথা কোনও কালেই মানেনি চিন। পশ্চিম চিনের শিনজিয়াং প্রদেশে মূলত উইঘুর সম্প্রদায়ের আদি বাস। কাশগড় তার অন্যতম প্রধান শহর। এঁদের সংস্কৃতি, যাপন চিনের মূল ভূখণ্ডের মানুষদের থেকে একেবারেই আলাদা। আর সেই বৈচিত্রকে বরাবর অস্বীকার করে এসেছে চিনের শাসক দল। তার জন্য শিনজিয়াং প্রদেশ জুড়ে তৈরি হয়েছে প্রচুর ডিটেনশন ক্যাম্প। ওই সমস্ত ক্যাম্পে অন্তত ১০ লক্ষ উইঘুরদের আটকে রেখে অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে। ২০১৭-১৮ সালে বিষয়টি নিয়ে চিনের শিনজিয়ান প্রদেশে ব্যাপক বিক্ষোভ হলে তা কড়া হাতে দমন করে সরকার। তখনই বিষয়টি আন্তর্জাতিক নজরে আসে। তবে লাগাতার চাপের মুখেও যে কিছুই বদলায়নি নতুন ডিটেনশন ক্যাম্পই তার প্রমাণ।