Omicron

Omicron: অতি সংক্রামক ওমিক্রন রুখতে বুস্টার টিকা, সঙ্গে আদি অকৃত্রিম পন্থাই ভরসা বিশেষজ্ঞদের

মডার্না জানিয়েছে, তাদের টিকা ডেল্টা স্ট্রেনকে ঠেকাতে বহুলাংশে সফল হলেও  ওমিক্রন ঠেকাতে তেমন কার্যকর হবে না বলেই আশঙ্কা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:২৮
Share:

ফাইল চিত্র।

বিশ্ব জুড়ে আতঙ্কের নতুন নাম এখন ‘ওমিক্রন’। দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম খুঁজে পাওয়া করোনার এই নতুন স্ট্রেনটির সম্পর্কে এখনও অনেক কিছু জানা বাকি। যে-টুকু জানা গিয়েছে তাতেই ঘুম উড়েছে বিশ্বের। উপসর্গ তেমন মারাত্মক না-হলেও ওমিক্রন অতি-সংক্রামক। বহু ক্ষেত্রে টিকা নেওয়া থাকলেও সংক্রমণকে রোখা যাচ্ছে না।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে আমেরিকার টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থা মডার্না জানিয়েছে, তাদের টিকা ডেল্টা স্ট্রেনকে ঠেকাতে বহুলাংশে সফল হলেও ওমিক্রন ঠেকাতে তেমন কার্যকর হবে না বলেই আশঙ্কা। বাকি প্রতিষেধক প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি ওমিক্রনের বিরুদ্ধে তাদের টিকার কার্যকারিতা নিয়ে এখনও মুখ খোলেনি।

তা হলে উপায়? সেই মাস্ক পরা আর সামাজিক দূরত্ববিধি পালনের মতো আদি এবং অকৃত্রিম পন্থাতেই আস্থা রাখার পরামর্শ দিয়েছেন আমেরিকার করোনা বিশেষজ্ঞ অ্যান্টনি ফাউচি। পাশাপাশি তাঁরা ভরসা রাখছেন বুস্টার ডোজ় ও টিকাকরণের উপরেই। ওমিক্রনের আতঙ্কে অযথা না-ঘাবড়ানোর কথা বলেছেন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেছেন, ‘‘ওই স্ট্রেনটি ভেরিয়েন্ট অব কনসার্ন, ভেরিয়েন্ট অব প্যানিক নয়।’’ অর্থাৎ ভেরিয়েন্টটি উদ্বেগের কারণ বটে, তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। প্রায় সেই সুরেই ফাউচি বলেছেন, ‘‘নতুন নতুন স্ট্রেন অবশ্যই উদ্বেগ জাগাচ্ছে। তবে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমাদের কাছেও পাল্টা হাতিয়ার রয়েছে।’’ করোনার সঙ্গে লড়াই করতে টিকাকরণের উপরেই জোর দিচ্ছে বাইডেন সরকার।

Advertisement

আমেরিকায় অধিকাংশ প্রাপ্তবয়স্কের টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। প্রাপ্তবয়স্কদের বুস্টার ডোজ় নেওয়ার উপরে জোর দিচ্ছেন প্রেসিডেন্ট। ফাউচি বলেছেন, সম্পূর্ণ টিকাকরণ এবং বুস্টার ডোজ় নেওয়া থাকলে সব রকমের করোনা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করা সম্ভব। ওমিক্রনের মতিগতি বুঝে প্রয়োজনে টিকার ডোজ়েও পরিবর্তন আনা হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন প্রেসিডেন্ট।

তবে বুস্টার ডোজ়ের প্রয়োগ নিয়ে ধনীদেশগুলি যত প্রচার চালাচ্ছে তত প্রকট হচ্ছে ভ্যাকসিন বৈষম্যের বিতর্ক। অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, টিকা বৈষম্যের কারণেই কি ওমিক্রনের মতো নতুন নতুন স্ট্রেনের উৎপত্তি?

গত বছর অক্টোবর নাগাদ আমেরিকা, চিন, রাশিয়ার মতো শক্তিধর দেশগুলিতে যখন করোনার প্রতিষেধক আবিষ্কারের হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছিল, তখনই সতর্ক করেছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) শীর্ষকর্তা টেড্রস অ্যাডানম গেব্রিয়েসাস। তিনি বলেছিলেন, কোনও দেশে সকলের সম্পূর্ণ টিকাকরণের আগে সব দেশের কিছু কিছু সংখ্যক মানুষকে টিকা দেওয়া জরুরি। তাতে ভাইরাসের নিত্য-নতুন মিউটেশন আটকানো যাবে। আমেরিকা, ফ্রান্স, জাপানের মতো দেশগুলিতে যখন ৭৫ শতাংশের টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে, তারা যখন দেশবাসীকে বুস্টার ডোজ় দেওয়ার কথা ভাবছে তখন দক্ষিণ আফ্রিকায় মাত্র ২৫ শতাংশ মানুষ একটি করে ডোজ় পেয়েছেন। আফ্রিকার বাকি দেশে টিকাকরণের হাল আরও খারাপ। হু-এর উদ্যোগে কোভ্যাক্স প্রকল্পের মাধ্যমে যদিও ৯২টি মধ্য আয় ও দরিদ্র দেশে কিছু কিছু করে প্রতিষেধক পাঠানো গিয়েছে, তবে প্রয়োজনের তুলনায় তা অনেকটাই কম। টিকাকরণের এই বৈষম্যের কারণেই ডেল্টা, ওমিক্রনদের দাপট বাড়ছে কি না তা আগামী দিনের গবেষণাতেই জানা যাবে, বলছেন বিশেষজ্ঞেরা। ওমিক্রনের দাপটে দক্ষিণ আফ্রিকায় ২ বছরের কম বয়সি শিশুদের মধ্যেও সংক্রমণ বাড়ছে। হাসপাতালে ভর্তি করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ১০ শতাংশের বয়স ২ বছরের কম। চিকিৎসকদের মতে, ওই বয়সের শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা পুরোপুরি গড়ে ওঠেনি। তার উপরে টিকাও পায়নি ওরা।

এ বার জাপানেও এক জনের শরীরে ওমিক্রনের অস্তিত্ব মিলেছে। নামিবিয়া ফেরত বছর তিরিশের ওই যুবককে আলাদা রেখে চিকিৎসা করা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement