—প্রতীকী চিত্র।
প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ভোট বয়কট করে দফায় দফায় অবরোধ ও হরতাল ডাকার পরেও বাংলাদেশে নির্বাচনী প্রক্রিয়া জোর কদমে চলছে। নির্বাচন কমিশনের নির্ঘণ্ট অনুসারে সোমবার ছিল মনোনয়ন পত্র যাচাই বাছাই করে বৈধ প্রার্থীদের নাম ঘোষণার দিন। ৩০০টি আসনের জন্য ২,৭১৬ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছিলেন। যাচাই-বাছাইয়ের পরে ৭৩১ জনের মনোনয়ন বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়েছে। বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১,৯৮৫ জন। এর মধ্যে শাসক আওয়ামী লীগের চার জন প্রার্থীর মনোনয়ন পত্রও খারিজ হয়ে গিয়েছে ঋণখেলাপের অভিযোগে। তবে মনোনয়ন বাতিলের বিরুদ্ধে প্রার্থীরা কমিশনে আবেদন করার সুযোগ পাবেন। তার নিষ্পত্তি হলে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হবে এ মাসের ১৫ তারিখে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভি অভিযোগ করেছেন, শাসক দলের নির্দেশ অনুযায়ী তাদের শক্ত প্রতিপক্ষ হতে পারে, এমন প্রার্থীদের মনোনয়ন পত্র খারিজ করেছে সরকারের অনুগত নির্বাচন কমিশন। শাসক দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ঘোষণা করেছেন, নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগের যে সব প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র খারিজ করেছে, দল তাদের দায়িত্ব নেবে না। কাদেরের দাবি, বিএনপির নির্বাচন বয়কটের ডাক মানুষ ইতিমধ্যেই উড়িয়ে দিয়েছেন তাদের হরতাল-অবরোধে সাড়া না দিয়ে। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ এখন নির্বাচনমুখী। নির্বাচনের দিন ভোটারদের না-আসা নিয়ে আর কোনও আশঙ্কা আমরা দেখছি না।”
এর মধ্যেই নির্বাচনের বিরোধিতা করে ফের বুধ ও বৃহস্পতিবার দেশ জুড়ে ‘সর্বাত্মক অবরোধ’-এর ডাক দিয়েছে বিএনপি এবং জামাতে ইসলামি। সোমবার পর্যন্ত তাদের ৪৮ ঘণ্টা হরতালের ডাকে কার্যত কোনও সাড়া মেলেনি। কেবল ঢাকা-সহ নানা জায়গায় বেশ কিছু যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়েছে। এ জন্য বিএনপির আরও কিছু কর্মীর বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। ‘গোপন জায়গা’ থেকে নিয়মিত ভার্চুয়ালি সাংবাদিক বৈঠক করে হরতাল-অবরোধ ঘোষণা করা বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভির বিরুদ্ধে সোমবার নাশকতার মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। তার পরেও এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে তুলোধোনা করেন রিজভি। তবে ঢাকায় তাদের কয়েকটি মিছিলে এ দিন একেবারেই লোক হয়নি।
এ বার শরিক দলগুলির জেতা আসনেও আওয়ামী লীগ প্রার্থী ঘোষণা করায় যে অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছিল, তা নিরসনে সোমবার সন্ধ্যায় ১৩টি শরিক দলের নেতাদের নিয়ে নিজের দফতরে বৈঠকে বসেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে শরিক দলের নেতারা আসন নিয়ে তাদের দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এ দিনও হয়নি। মঙ্গলবার বেলা ১২টায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিক বৈঠক করে শরিকদের কোন কোন আসন ছাড়া হবে, তা ঘোষণা করবেন। তবে জাতীয় পার্টির সঙ্গে আসন সমঝোতা হচ্ছে না বলে আওয়ামী লীগ সূত্রে দাবি।