আবার! আরও এক বার!
ভয়ঙ্কর হত্যালীলায় রক্তাক্ত মার্কিন ভূমি।
সপ্তাহান্তের উৎসবে মত্ত নিশি নিলয়ে আচম্বিতে শুরু হল মৃত্যুর উৎসব। এক বন্দুকবাজ দু’হাতে গুলি ছুড়তে ছুড়তে বিছিয়ে দিল শবের পর শব। আর কোথাও কোনও নিকষ অন্ধকার প্রান্তে সন্ত্রাসের উপাসনা গৃহে যেন চকচক করে উঠল ভীষণদর্শন কোনও বিগ্রহের চোখের মণি।
যে পঞ্চাশ জনের মৃত্যু হল, যুদ্ধটা কি ঠিক এঁদেরই বিরুদ্ধে? এই প্রাণগুলো ছিনিয়ে নিয়েই কি যুদ্ধে অনেকটা এগিয়ে যেতে পারল সন্ত্রাস?
আসলে কোনও নির্দিষ্ট প্রাণ নয়, সন্ত্রাসের নিশানা একসঙ্গে অনেক প্রাণ। সন্ত্রাসের অভীষ্ট এক নিশানায় অনেকটা হানি।
এ লড়াইয়ে যারা আমাদের প্রতিপক্ষ, তারা সভ্যতার স্বাভাবিক, সাধারণ নিয়মগুলো মানে না। পঞ্চাশটা নির্দোষ, নিরপরাধ মানুষকে আচমকা চিরঘুমে শুইয়ে দিতে এদের দ্বিধা হয় না।
ওমর মাতিন নামে এক আফগান বংশোদ্ভুত মার্কিন নাগরিক অরল্যান্ডোয় শবের মিছিল নামাল। শবগুলো শব হয়ে ওঠার আগে কি ওঁদের এক জনের সঙ্গেও ওমরের কোনও বৈরিতা ছিল? নিদেনপক্ষে কোনও আলাপও কি ছিল?
কার উদ্দেশে কাদের বলিতে চড়ালো আততায়ী? জবাব ছিল না ঘটনাটার আগেও। জবাব এখনও নেই।
অথবা জবাব আছে। কিন্তু সন্ত্রাসের ভাষায় লেখা সে জবাব নাগরিক সমাজে দুর্বোধ্য। তাই জবাব আর চাওয়া নয়। জবাব দেওয়ার সময় এখন। হয় সভ্যতা থাকবে, নয়তো সভ্যতার বুনিয়াদি ধারণাটাকেই বার বার ভেঙে গুঁড়িয়ে দিতে উদ্যত এই সন্ত্রাস থাকবে।
দায়িত্ব যেমন বিভিন্ন রাষ্ট্রব্যবস্থার, দায়িত্ব তেমনই সমাজেরও। সভ্যতার পক্ষ নিয়ে এই সমাজ কি নির্মূল করে দিতে পারে না সন্ত্রাসের অঙ্কুরগুলোকে? নষ্ট করে দিতে পারে না হিংসার বীজগুলোকে? সভ্যতার পথে, নাকি অন্য পথে? মোড়টাতে দাঁড়িয়ে যাঁরা, তাঁদের পথনির্দেশ দেওয়ার ব্যবস্থা সমাজকেই করতে হবে।