লুইগি ম্যানজিওনি। ছবি: সংগৃহীত।
গত সপ্তাহে নিউ ইয়র্কে একটি কনফারেন্সে যোগ দিতে এসে গুলিতে খুন হয়েছিলেন আমেরিকার বিমা সংস্থা ইউনাইটেড হেলথ্ কেয়ারের সিইও ব্রায়ান টমসন। সেই হত্যা-কাণ্ড নিয়ে হইচই শুরু হয়েছিল দেশ জুড়ে। খুনের পর থেকেই হন্যে হয়ে হত্যাকারীর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছিল পুলিশ। অবশেষে পেনসিলভেনিয়া থেকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার করা হয়েছে বছর ছাব্বিশের তরুণ লুইগি ম্যানজিওনিকে। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে তরুণ লুইগির সমর্থনে উপচে পড়ছে সমাজমাধ্যমের পোস্ট। অনেক আমেরিকান তরুণী তো তাঁকে প্রেমের প্রস্তাবও দিয়েছেন ইনস্টাগ্রাম, টিকটকের মতো প্ল্যাটফর্মে।
পুলিশ জানাচ্ছে, দিন কয়েক আগে পেনসিলভেনিয়ার অ্যালটুনার একটি বহুজাতিক সংস্থার বার্গারের দোকানের কর্মী পুলিশকে ফোনে জানান, তাঁদের দোকানে এক সন্দেহভাজন যুবক বসে রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, নিউ ইয়র্কে একটি ইউথ হস্টেলে থাকছিল লুইগি। সেখানকার এক রিসেপশনিস্টের সঙ্গে ‘ফ্লার্ট’ করতে গিয়ে প্রথম বার মুখের মাস্ক খুলেছিল সে। তখনই তার ছবি ক্যামেরায় ধরা পড়ে। পুলিশ ওই বার্গারের দোকানে গিয়ে যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করলে প্রথমে সে একটি জাল আইডি দেখায়। তার কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি ছোট আগ্নেয়াস্ত্রও। তবে সিইও খুনে সেই অস্ত্রই ব্যবহৃত হয়েছে কি না, তা নিয়ে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেনি পুলিশ। ওই বার্গারের দোকান থেকেই গ্রেফতার করা হয় লুইগিকে। গত কাল পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন তার একটি ‘মাগশট’ প্রকাশ করে পুলিশ। তার পর থেকেই সমাজমাধ্যমে উপচে পড়ছে লুইগির প্রতি সমবেদনা। অনেকেই খুনে অভিযুক্ত ওই তরুণকে আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্য অনুদান তুলতে শুরু করেছেন। অনেক তরুণী তো সরাসরি প্রেমের প্রস্তাবও দিয়েছেন ধৃত তরুণকে।
ঠিক কী কারণে ওই তরুণ এত জনপ্রিয়তা পাচ্ছে, তার কারণ নিয়ে সন্দিহান পুলিশও। তারা জানাচ্ছে, মাত্র দু’দিনে কয়েকশো থেকে লুইগির ফলোয়ার সংখ্যা সাড়ে ২১ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। এবং তা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। কোন আক্রোশ থেকে ব্রায়ানকে সে খুন করেছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। পুলিশ জানাচ্ছে, মাস ছয়েক আগে বল্টিমোরে পরিবারের সঙ্গে সব যোগাযোগ ছিন্ন করে দিয়েছিল লুইগি। শিড়দাঁড়ার সমস্যায় বহু বছর ধরে ভুগছিল সে। পিঠের অস্ত্রোপচারের পরেও যন্ত্রণা কমেনি। বিমা সংস্থার বিরুদ্ধে নানা সময়ে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করতে দেখা যেত তাকে। সেই রাগ থেকেই বিমা সংস্থার সিইও-কে সে এ ভাবে হত্যা করেছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।