ইলন মাস্ক। —ফাইল চিত্র।
দফতরের নাম ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি’ বা সংক্ষেপে ডিওজিই। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ নেওয়ার আগেই তাঁর প্রশাসনের তরফে চালু করা হয়েছিল এই দফতর। উদ্দেশ্য, আমেরিকার বিভিন্ন ‘অপ্রয়োজনীয়’ কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা (ফেডারাল এজেন্সি) বন্ধ করে দেওয়া। সেই সঙ্গে দেশে সরকারি চাকরির পরিমাণও তিন চতুর্থাংশ কমিয়ে আনা। ডিওজিই-র মাথায় রয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধু তথা ধনকুবের শিল্পপতি ইলন মাস্ক। মাস্কের পাশাপাশি ভারতীয় বংশোদ্ভূত রিপাবলিকান নেতা বিবেক রামস্বামীও এই দফতরের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। তবে সেই পদ থেকে সদ্য তাঁকে সরিয়ে দিয়েছেন মাস্ক। শোনা যাচ্ছে সামনের সপ্তাহে ওহায়ো প্রদেশের গভর্নর পদের জন্য লড়বেন রামস্বামী। আমেরিকায় নতুন প্রশাসন সদ্য কাজ শুরুর সঙ্গে সঙ্গে রামস্বামীকে মাস্ক ছেঁটে ফেলায় নানা জল্পনা শুরু হয়েছে হোয়াইট হাউসের অন্দরেই।
ডিওজিই-র কর্মকাণ্ডের সঙ্গে পরিচিত কিছু সরকারি কর্মী অবশ্য জানাচ্ছেন, রিপাবলিকান নেতাদের অনেকেই বিবেককে একেবারে পছন্দ করতেন না। ফলে এই নতুন দফতর থেকে তাঁর বাদ পড়া এমনিতেই ছিল সময়ের অপেক্ষা। তাঁর জায়গায় নিজের অত্যন্ত পছন্দের তিন ব্যক্তিত্বের মধ্যে যে কোনও এক জনকে মাস্ক বসাবেন বলেও মনে করা হচ্ছে। গত ডিসেম্বরে এক্স হ্যান্ডলে এইচ-১ বি ভিসা নিয়ে কিছু মন্তব্য করেছিলেন বিবেক। যা আদতে সরাসরি আমেরিকান সরকারের সমালোচনা হিসেবে মনে করেছিলেন অনেকে। সেই মন্তব্যের জন্যই বিবেককে এত দ্রুত সরতে হল বলেও মনে করছেন সরকারের অন্দরের অনেকে। বিবেক অবশ্য জানিয়েছিলেন, ডিওজিই-র নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছেন তিনি। এই দফতরের সঙ্গে জড়িত অনেকেরই বক্তব্য ছিল, ডিসেম্বর থেকেই তাঁকে কোনও কাজ করতে দেওয়া হচ্ছিল না। হোয়াইট হাউসের তরফে অবশ্য এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, ওহায়োর গভর্নর পদে লড়াইয়ের যে সিদ্ধান্ত বিবেক নিয়েছেন, সেই জন্যই এই পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে তাঁকে। বিরোধী শিবির ষড়যন্ত্রের গন্ধই পাচ্ছে।
গত কাল শপথ নেওয়ার পরেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ডিওজিই-র দফতর সংক্রান্ত কাজ নিয়ে বিশেষ নির্দেশিকায় সই করেছেন। প্রচুর পরিমাণ সরকারি চাকরি ছাঁটাই করাই যার মূল উদ্দেশ্য। এর পর পরই ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে একাধিক মামলা হয়েছে। সরকারি কর্মচারী সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, শিক্ষক সংগঠন, জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত সংগঠন মামলাগুলি দায়ের করেছে। আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সেলরের তরফে বলা হয়েছে, ট্রাম্প যা করতে চলেছেন, তা ১৯৭২ সালের আইনের পরিপন্থী।