তুরস্ক এবং সিরিয়ায় ভূমিকম্পের কবলে পড়ে এখনও পর্যন্ত ৪১ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত।
খাবার এবং জল ছাড়া ২৭৮ ঘণ্টা ধরে আটকে ধ্বংসস্তূপের মধ্যে। ভূমিকম্প বিধ্বস্ত সিরিয়ায় বিপর্যয়ের ১২ দিন পর ৪৫ বছর বয়সি এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করল সেই দেশের বিপর্যয় মোকাবিলা দল। হাকান ইয়াসিনোগ্লু নামের ওই ব্যক্তিকে সিরিয়ার সীমান্তবর্তী হাতায়ে প্রদেশ থেকে উদ্ধার করা হয়। নেটমাধ্যমে ওই ব্যক্তিকে উদ্ধারের ছবি ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে। ছবিতে দেখা গিয়েছে উদ্ধারকারীরা তাঁকে একটি বাড়ির ধ্বংসাবশেষ থেকে উদ্ধারের পর স্ট্রেচারে করে নিয়ে যাচ্ছেন। ঠান্ডা থেকে বাঁচাতে একটি মোটা জ্যাকেট দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে তাঁর সর্বাঙ্গ। এর পর তাঁকে অ্যাম্বুলেন্সে চাপিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যান উদ্ধারকারীরা।
তুরস্কে এখন তীব্র ঠান্ডা। মাঝেমধ্যেই চলছে শৈত্যপ্রবাহ। তার মধ্যেই চলছে উদ্ধারকাজ। গত কয়েক দিনে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া মানুষদের সংখ্যা হাতেগোনা। বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার মিলিয়ে মোট তিনজনকে উদ্ধার করা হয়েছে, যার মধ্যে এক ১৪ বছর বয়সি কিশোরও রয়েছে। তবে এখনও হাল ছা়ড়তে রাজি নন দু’দেশে উদ্ধারকাজে লেগে থাকা উদ্ধারকারীরা।
তুরস্ক এবং সিরিয়ায় ভূমিকম্পের কবলে পড়ে এখনও পর্যন্ত ৪১ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আহতের সংখ্যা কয়েক হাজার পেরিয়েছে। লক্ষ লক্ষ মানুষ আশ্রয় হারিয়ে রাত কাটাচ্ছেন শীতের মধ্যে। পর্যাপ্ত খাবার না মেলায় সরকারের প্রতিও ক্ষোভে ফুঁসছেন দু’দেশের সাধারণ মানুষ। বিপদের মুখে পড়া দুই দেশে বাইরের অনেক দেশ থেকে ত্রাণ পাঠানো হয়েছে। ত্রাণসামগ্রী এবং চিকিৎসকদের দল পাঠিয়েছিল ভারতও।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় ভোর ৪টে ১৭ মিনিটে কেঁপে ওঠে তুরস্ক এবং সিরিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৮। ইউনাইটেড স্টেটস জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, কম্পনের উৎসস্থল ছিল তুরস্কের গাজিয়ানতেপ প্রদেশের পূর্ব দিকে নুরদাগি শহর থেকে ২৬ কিলোমিটার পূর্বে ভূগর্ভের প্রায় ২৪.১ কিলোমিটার গভীরে। তার পর থেকে গত ১২ দিনে বহু বার কেঁপে ওঠেছে দুই দেশের বিভিন্ন এলাকা।