প্রতীকী চিত্র।
কাঞ্চনরঙা রোদে প্রকৃতি যখন আরও সবুজ হয়ে উঠেছে তখন বসি শাড়ি বাছতে। নিউ জার্সিতে দেশীয় ব্র্যান্ডের শাড়ির দোকান থাকলেও দেশ থেকে দুর্গাপূজার জন্য শাড়ি কিনে আনে সবাই।দেশে, ছোটবেলায় পুজোর সময়ে দেখতাম শাড়িওয়ালাদের, ইয়া বড় বোঁচকা কাঁধে। ফুলিয়ার তাঁত, সুতির শাড়ি। সদ্য পাটভাঙা শাড়ি পরে মা, হাতে পিতলের থালায় অষ্টমীর প্রসাদ। দশমীতে বেরোত ন্যাপথালিন ভাঁজে রাখা গরদের শাড়ি। বিদেশেও গিন্নিরা লালপাড়-সাদা শাড়ি রাখেন সিঁদুর খেলার জন্য। নিউ জার্সির কেন্ডাল পার্কের ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের দুর্গাপুজো খুব প্রসিদ্ধ।
প্রতিবার পুজোয় সেখানেই যাই। পঞ্জিকা মেনে পূজা হলেও অঞ্জলি হয় বিকেলে। এখানকার বৈশিষ্ট্য মায়ের আরতি। সাত সমুদ্দুর পেরিয়ে আসে কলাবৌ। সুদূর প্রবাসেও মায়ের গলায় বেলকুঁড়ির মালা। ১০৮টা পদ্মের পাশে সাজিতে রাখা কারনেশান, ডালিয়া, ডেজ়ি, গোলাপও নির্দ্বিধায় প্রাচ্যের দেবীর অর্ঘ্য হয়ে ওঠে। এই বছর পৃথিবী রোগশয্যায়। তাই পুজোর কয়েক দিন দু’ঘণ্টা করে সীমিত উপস্থিতির ব্যবস্থা থাকছে।
ওক-মেপেলের পাতায় শীতের মায়াবিন্দু জমে। ছোটবেলায় ছড়া শুনতাম ‘দুগ্গাঠাকুর পড়লে জলে, শীত এসে জাঁকিয়ে ধরে।’ শিরশিরে আর্দ্রতা নামে নীলপাখির পালকে। ব্লু জে। আশমানি আর ঘননীলের নকশা তোলা ডানা। শঙ্খের মতো সাদা বুক, গলায় গাঢ় নীল বলয়। যে দেশে পদ্মঢাকা দীঘির পাশে নীলকণ্ঠ পাখি এসে বসে না, সেখানে ব্লু জে আসে। উৎসব শেষে শ্রান্ত প্রহরের গল্প শোনায়। পুরনো রাজ্যপাটে রূপকথারা জমা হতে থাকে পরবর্তী শরতের অপেক্ষায়।