প্রতীকী ছবি।
কথায় বলে, যেখানে বাঙালি সেখানেই পুজো। হংকংয়েও তার অন্যথা হওয়ার কথা নয়, হয়ওনি। ১৯৯৯ সালে শুভারম্ভ, তার পরে দু’দশক ধরে হংকং বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন (এইচকেবিএ)-র উদ্যোগে নিষ্ঠার সঙ্গে দুর্গাপুজো হয়েছে। নিষ্ঠা আর উদ্যমের খামতি ছিল না এ বছরও। কিন্তু ২০২০ যে ব্যতিক্রমী বছর হতে চলেছে সেটা হংকং-বাসীরা টের পেয়েছিলেন বছরের শুরুতেই। বাকি বিশ্ব যখন অতিমারির ভয়াল রূপ প্রত্যক্ষ করছে, তখন হংকং অনেকটাই সামলে নিয়েছে। ওয়র্ক ফ্রম হোম, অনলাইন স্কুল, কোয়রান্টিন বিধি-নিষেধ ইত্যাদি ‘নিউ নর্মাল’ জীবনযাত্রায় হংকং তত দিনে অভ্যস্ত। কিন্তু হংকং গভর্নমেন্টের জনসমাবেশ সংক্রান্ত বিবিধ নিষেধাজ্ঞা সামলে দুর্গাপুজো হবে কি না, সেই প্রশ্ন এপ্রিল-মে মাস থেকেই ঘুরপাক খাচ্ছিল। তা ছাড়া, বিমান পরিষেবা প্রায় স্তব্ধ হয়ে যাওয়ায়, পুরোহিত, ঢাকি ও রান্নার ঠাকুরের আসা নিয়েও অনিশ্চয়তা ছিল। শেষ পর্যন্ত তাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল শুধু ঘটপুজো হবে। এই ঘোষণায় মন খারাপ হলেও, সামাজিক দায়বদ্ধতার কারণে বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যবৃন্দ এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছে। সমাবেশ না হয় হল না, কিন্তু অনলাইনে পুজোর আনন্দ উপভোগ করা থেকে বাঙালিকে আটকাবে কে? সলতে পাকানোর কাজ শুরু হয়েছিল রবীন্দ্র জয়ন্তীর সময়েই। জ়ুমের মাধ্যমে, গান, কবিতা, শ্রুতিনাটকে, হংকংয়ের রবীন্দ্র জয়ন্তী সুচারু ভাবে আয়োজিত হয়েছিল মে মাসে। সেই একই পথে দুর্গাপুজোকে আবর্তিত করে অনলাইন প্রোগ্রামের পরিকল্পনা সেরে ফেলেছে অ্যাসোসিয়েশন। মূল পুজোর লাইভ-সম্প্রচার হবে কলকাতার এক সাবেকি বাড়ির পুজো থেকে। বোধন, মূর্তি-প্রতিষ্ঠা ছাড়াও পুষ্পাঞ্জলি দেখা যাবে সব দিনই। দেখা যাবে সন্ধিপুজো, কুমারী পুজোও। পুজোর পরে এক দিন জমজমাট আড্ডা হবে অনলাইনে। প্রআমাদের অ্যাসোসিয়েশনের বাৎসরিক পত্রিকা ২০২০ সালের বিচিত্র ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করবে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এখানকার পুজোর একটি বড় আকর্ষণ বরাবরই। সেই অনুষ্ঠান ও হবে অনলাইনে। সদস্যরা ছোট ছোট প্রোগ্রামের ভিডিয়ো অ্যাসোসিয়েশনের ফেসবুক পেজে আপলোড করছেন, সেই মহালয়া থেকেই। সব মিলিয়ে মনে হচ্ছে পুজো কাটবে ভালই। এতেও যদি আশ না-মেটে, বাংলা চ্যানেলের পুজো পরিক্রমা তো আছেই!