ফাইল চিত্র।
অন্য বারের মতন এ বারও শরৎ এসেছে ক্যালিফোর্নিয়ায়। আকাশে পেঁজা তুলোর মতো মেঘ আর হাইওয়ে-র ওপর দিয়ে গাড়ি গেলেই দু’ধারে কাশের গুচ্ছ মাথা দুলিয়ে জানিয়ে দিচ্ছে, পুজোর কাউন্টডাউন শুরু। কিন্তু প্রতিবারের মতো এ বার আর পুজোয় কেনাকাটার ধুম নেই, পুজো-কমিটির উদ্যোক্তাদের চায়ের আড্ডা নেই, পার্কিংয়ের প্ল্যান নেই, রেস্তরাঁয় ভোগের অর্ডার নেই...। তবু, পুজো আসছে। এই করোনা-কালে করুণাময়ীকে আবাহন জানাতে এ বার তাই এখানকার পুজো বেশ অন্য রকম।
বে-এরিয়ায় ছোট বড় মিলে ন’টা দুর্গাপুজো হয়। অতএব, নয়-নয় করেও বাঙালির সংখ্যা যে এখানে কম না, তা তো বোঝাই যাচ্ছে। আর দুর্গাপূজা তো আমাদের প্রাণের উৎসব, তাই পুজো একেবারে বন্ধ না-করে বেশির ভাগ পুজো-কমিটি-ই এ বার ভার্চুয়াল পুজোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, প্রযুক্তির সাহায্যে। ভক্ত ভগবানের কাছে না পৌঁছতে পারলে, ভগবানকেই যে ভক্তের কাছে নিয়ে আসতে হবে আমাদের! তাই সিলিকন ভ্যালি সার্বজনীন দুর্গোৎসবের পক্ষ থেকে আমদের ‘টেক-টিম’ কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে এই অসম্ভব কে সম্ভব করতে। আমাদের পুজোয় এ বার পৌরোহিত্য যিনি করছেন তিনি কলকাতা থেকেই মন্ত্রোচ্চারণ করবেন। ফেসবুক লাইভ আর ইউটিউবের সাহায্যে আমাদের পুজো পৌঁছে যাবে পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তের উৎসুক বাঙালির কাছে। এই পুজো কমিটির সদস্যরা ‘জ়ুম লিঙ্ক’-এর মাধ্যমে দিতে পারবেন অনলাইন অঞ্জলি। পুজোর ন্যূনতম জোগাড় করার জন্য যাঁরা থাকবেন, তাঁরাও ৬ ফুটের দূরত্ব মেনে, মাস্ক আর গ্লাভস পরেই এ বার পুজোর কাজ করবেন। স্বেচ্ছাসেবকেরা ফল, মিষ্টি, ফুল বা মালা গেঁথে মণ্ডপের বাইরে রেখে যাবেন। সেখান থেকে তা সংগ্রহ করে নেব আমরা। প্রতি ঘণ্টায় সানিটাইজ় করা হবে পুজোর জায়গা।
প্রতি বছরের মতো বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানের জন্য রিহার্সালও চলছে পুরোদমে, কিন্তু সবটাই ভিডিয়ো কনফারেন্সিং করে। কারও কোনও অভিযোগ নেই। এ বার পুজোয় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডাও হবে অনলাইনেই। এ বার পুজোয় কোনও আড়ম্বর থাকবে না, তবে আমরা নিশ্চিত, পুজোর আনন্দ একটুও কম হবে না।