ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।
জেলে যেতে তাঁর কোনও অসুবিধা নেই। কিন্তু তাঁকে জেলে পুরলে সমর্থকেরা ছেড়ে কথা না-বলতেও পারেন। রবিবার একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনই ‘হুমকি’ দিলেন আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
দিন কয়েক আগেই পর্ন তারকাকে ঘুষ দেওয়া কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন ট্রাম্প। তাঁর বিরুদ্ধে আনা ৩৪টি অভিযোগের সব ক’টিই প্রমাণিত হয়েছে বলে রায় দিয়েছে নিউ ইয়র্কের এক আদালত। আমেরিকার ইতিহাসে কোনও প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের ফৌজদারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার ঘটনা এই প্রথম। রবিবার আমেরিকার একটি টিভি চ্যানেলে ট্রাম্পের একান্ত সাক্ষাৎকার সম্প্রচারিত হয়। সেখানে তাঁকে এই মামলার রায়ের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে ট্রাম্প বলেন, ‘‘এই রায়ে আমার কিছু যায়-আসে না। তবে জনগণ এই রায় মেনে নেবেন কি না, জানি না।’’ এখানেই না থেমে ট্রাম্প আরও বলেন, ‘‘আমার ধারণা, জনগণের পক্ষে এই রায় মেনে নেওয়া মুশকিলের হবে। অনেক সময়েই (এই ধরনের রায়) ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে দেয়।’’
জাতীয় টিভিতে ট্রাম্পের এই ‘অকপট’ মন্তব্য অনেকের মনেই উস্কে দিয়েছে ২০২১-এর ৬ জানুয়ারির স্মৃতি। ২০২০-র নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের কাছে পরাজিত হন ট্রাম্প। প্রথম থেকেই ভোটের ফল মানতে নারাজ ছিলেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট। বাইডেনের জয়ে সরকারি শিলমোহর দিতে ৬ জানুয়ারি কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশন বসেছিল। তখন হোয়াইট হাউস থেকে ট্রাম্প উস্কানিমূলক বক্তৃতা দিয়ে ফের দাবি করেন, নির্বাচনের এই ফলাফল ভুয়ো। বারবার সমর্থকদের বলেন, ‘এই প্রাপ্য জয় ছিনিয়ে নিতে হবে’। তারপরেই ক্যাপিটলে তাণ্ডব চালান ট্রাম্পপন্থীরা। মারা যান পাঁচ জন। জখম হন ১৭৪ জন পুলিশকর্মী-সহ অনেকে।
ট্রাম্প যে সব ধারায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন, সেই অপরাধে সর্বোচ্চ সাজা চার বছরের কারাদণ্ড। সাজা ঘোষণা হবে ১১ জুলাই। ঘটনাচক্রে তার পরের দিনই রিপাবলিকান দলের জাতীয় কনভেনশন, যে দিন সরকারি ভাবে রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে ট্রাম্পের নাম ঘোষণা হওয়ার কথা। আমেরিকার আইনে জেলে থেকেও অবশ্য কেউ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন। তবে রিপাবলিকান দল শেষ পর্যন্ত সে রকম প্রার্থীকেই বেছে নেবে কি না, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।