সেই কুকুর, ট্রাম্পের টুইটে
বেলজিয়ান ম্যালিনওয়া— এই প্রজাতির একটি কুকুরই এখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নয়নের মণি! আইএসের প্রতিষ্ঠাতা নেতা আবু বকর আল-বাগদাদিকে মারতে সিরিয়ার ইদলিব প্রদেশের বারিশা এলাকায় শনিবার রাতে যখন ঢুকেছিল মার্কিন বিশেষ বাহিনী, তখন তাদের সঙ্গে ছিল ওই বেলজিয়ান ম্যালিনওয়া।
অভিযানের সময়ে এটিই নাকি আল-বাগদাদিকে ঠেলে সুড়ঙ্গের শেষ প্রান্তে নিয়ে যায়। পথ না-পেয়ে আত্মঘাতী জ্যাকেটের বোতাম টিপে নিজেকে উড়িয়ে দিয়েছিলেন আল-বাগদাদি, জানান ট্রাম্প। মার্কিন বাহিনীর কোনও ক্ষতি না-হলেও কুকুরটি সামান্য জখম হয়েছে বলে দাবি। তার চিকিৎসা চলছে।
বেলজিয়ান ম্যালিনওয়াটি এখন প্রেসিডেন্টের নেকনজরে। তাকে কখনও ‘বিউটিফুল’, কখনও ‘ওয়ান্ডারফুল’ বলে টুইট করছেন ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, কুকুরটির ছবি প্রকাশ্যে আনা হলেও নিরাপত্তার খাতিরে নাম জানানো হচ্ছে না। তবে কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের দাবি, কমেডিয়ান কোনান ও’ব্রায়েনের নামে ওই মাদি-কুকুরটির নাম রাখা হয়েছে কোনান।
গত রবিবার ট্রাম্প বেলজিয়ান ম্যালিনওয়াকে বলেছিলেন, ‘গুড বয়’। তাঁর মতে ওই কুকুরটি অসম্ভব দক্ষতাসম্পন্ন। মার্কিন প্রতিরক্ষাসচিব, মার্ক এসপার বলেছেন, ‘‘কুকুরটি দারুণ পরিশ্রমী। ওদের এটাই গুণ।’’
মার্কিন সেনাবাহিনী এমনিতেই নিজেদের সুরক্ষা, শত্রু খোঁজা এবং বিস্ফোরক সন্ধানে বেলজিয়ান ম্যালিনওয়াকে ব্যবহার করে। এই প্রজাতির কুকুর অসম্ভব বুদ্ধিমান। নির্দেশ পেলে সে পলকেই হয়ে উঠতে পারে আক্রমণাত্মক! তাই এ ধরনের কুকুর গুরুত্বপূর্ণ অভিযানে খুবই সাহায্য করে। কায়রো নামে এই ধরনেরই আর একটি বেলজিয়ান ম্যালিনওয়া কুকুর ২০১১ সালে ওসামা বিন-লাদেনকে মারার সময়ে সঙ্গ দিয়েছিল মার্কিন নেভি সিলকে।
গত শনিবার রাতে আল-বাগদাদির ডেরায় মিনিট ১৫ অপেক্ষা করে তাঁর দেহাংশের ডিএনএ পরীক্ষা হয়েছিল। তার পরে দেহাবশেষ ফেলে দেওয়া হয় সমুদ্রে। মার্কিন জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান মার্ক মিলি বলেছেন, ‘‘বাগদাদির দেহাবশেষ একটি সুরক্ষিত জায়গায় নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছিল। তার পর সে দেহাবশেষ যথার্থ প্রক্রিয়া মেনে সমুদ্রে নিক্ষেপ করা হয়।’’ পেন্টাগনের এক অফিসার নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, বাগদাদির দেহাবশেষ অজানা জায়গায় সমুদ্রে ফেলে দেওয়া হয়েছে। ঠিক যেমনটা হয়েছিল, আল-কায়দা প্রধান ওসামা বিন লাদেনের ক্ষেত্রে।
এক কুর্দিশ অফিসার সূত্রে আবার জানা গিয়েছে, আল-বাগদাদির অন্তর্বাস জোগাড় করা হয়েছিল অনেক আগেই। ডিএনএ পরীক্ষায় যাতে নিশ্চিত প্রমাণ করা যায়, যে নিহত ব্যক্তি বাগদাদিই।
গত কাল খবর মিলেছিল, বাগদাদির পরে আইএসের প্রধান হয়েছে ইরাকের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হুসেনের বাহিনীর অফিসার আবদুল্লা কারদাশ। এর মধ্যে সংবাদ সংস্থা সূত্রে ফের জানা যাচ্ছে, ট্রাম্প নাকি দাবি করেছেন, আল-বাগদাদির এক নম্বর উত্তরসূরিকেও মার্কিন বাহিনী শেষ করে দিয়েছে। তবে এই ব্যক্তি কারদাশই কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। মার্কিন বাহিনী অবশ্য আইএসের আর এক শীর্ষ নেতা আবু আল-হাসান আল-মুহাজিরকেও মেরে ফেলা হয়েছে বলে জানিয়েছিল। ট্রাম্প নতুন করে টুইটে এদের মধ্যে কার দিকে ইঙ্গিত করছেন, নাম উল্লেখ না করায় তা স্পষ্ট নয়।