ছবি এপি।
শরণার্থী শিবিরের অবস্থা নিয়ে অভিযোগ আছে? তা হলে শরণার্থী হয়ে এ দেশে আসবেন না!
এই ‘সমাধান’ বাতলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আজ, আমেরিকার স্বাধীনতা দিবসের আগে একের পর এক টুইট করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘এই সব বেআইনি ভিন্দেশিদের অনেকেই এখন আগের চেয়ে ভাল আছেন। যেখান থেকে ওঁরা এসেছেন, সেখানকার চেয়ে অনেক নিরাপদেও আছেন। আমাদের সীমান্তরক্ষীরা কেউ হাসপাতাল-কর্মী, ডাক্তার বা নার্স নন। সমস্যা হচ্ছে ডেমোক্র্যাটদের তৈরি করা খারাপ অভিবাসন আইনের জন্য। আগে সেটিকে মেরামত করা দরকার।’
মেক্সিকো সীমান্তে শরণার্থী শিবিরগুলির দুরবস্থা নিয়ে ডেমোক্র্যাটদের পাশাপাশি লাগাতার সরব মানবাধিকার কর্মীরাও। সম্প্রতি টেক্সাসের রিয়ো গ্রান্দে ভ্যালি-র শরণার্থী শিবিরে গিয়েছিলেন নিউ ইয়র্কের ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি আলেকজ়ান্দ্রিয়া ওকাসিয়ো-কর্তেজ। তিনি বলেছিলেন, এল পাসো-তে শরণার্থীদের শৌচাগারের জলই খেতে বলা হচ্ছে। গরম খাবার জুটছে না শিশুদের। এর পরেই সীমান্তরক্ষীদের একটি ফেসবুক গ্রুপে কুৎসিত আক্রমণ করা হয় আলেকজ়ান্দ্রিয়াকে। যা নিয়ে প্রবল ক্ষুব্ধ খোদ বাহিনীরই প্রধান। অথচ ট্রাম্প সীমান্তরক্ষী বাহিনীর দেদার প্রশংসা করেছেন। তাঁর টুইট, ‘তাড়াহুড়ো করে বানানো ডিটেনশন সেন্টার নিয়ে বেআইনি শরণার্থীদের এত সমস্যা থাকলে ওঁদের আসতেই বারণ করে দিন না! অবস্থা যতই ভাল হোক, ডেমোক্র্যাটরা খারাপটাই দেখবেন। দক্ষিণ সীমান্তের সঙ্কটের যদি সমাধান চান, তা হলে শরণার্থীদের বলুন আইনি পথে আসতে। আশা করব, মেধাভিত্তিক পদ্ধতিটাই ওঁরা মানবেন। তা হলে আর কোনও সমস্যা থাকবে না।’
ট্রাম্পের বক্তব্য, সীমান্তে ডেমোক্র্যাটদের চেয়েও ভাল কাজ করছে মেক্সিকো। তার জন্য মেক্সিকো সরকারকে ধন্যবাদ দিয়েছেন তিনি। তবে গত কালই সিয়াটলের এক আদালতে ধাক্কা খেয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। যে সব শরণার্থীকে মামলা লড়তে হচ্ছে, তাঁদের হেফাজতে রাখা যাবে না বলে রায় দিয়েছে আদালত। সেই প্রসঙ্গে হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব স্টেফানি গ্রিশাম বলেছেন, ‘‘এই সিদ্ধান্তে চোরাচালানকারী আর মানুষ পাচারকারীরাই চাঙ্গা হয়ে উঠবে।’’
সন্দেহ নেই, গত বারের মতো মার্কিন-অস্মিতাকে অস্ত্র করেই দ্বিতীয় বারের জন্য ভোটে যাচ্ছেন ট্রাম্প। তাঁর দাবি, ২০২০-র জনগণনায় একটাই প্রশ্ন করা হোক— ‘আপনি কি আমেরিকান?’ যদিও এই অস্ত্র এক অর্থে বুমেরাংও হয়েছে তাঁর কাছে। কারণ, ট্রাম্পের ব্যবসায়িক সংস্থাই এক সময়ে বেআইনি অভিবাসীদের একটা বড় অংশকে চাকরি দিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে একটি সংবাদপত্রের অন্তর্তদন্তে। বসবাসের বৈধ কাগজপত্র না-থাকা সত্ত্বেও ট্রাম্পদের গল্ফ কোর্স তৈরিতে, ঘরোয়া কাজকর্মে এমনকি রান্নাবান্নার কাজেও এঁদের নিয়োগ করা হয়েছিল বলে দাবি করেছে কাগজটি। সেই রকমই ২১ জন কর্মী বসবাসের বৈধ নথিপত্র চেয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছেন। প্রেসিডেন্টের সংস্থার অবশ্য বক্তব্য, ভুয়ো নথি দেওয়ায় চাকরি গিয়েছিল এঁদের। মুখ খোলেনি হোয়াইট হাউসও।